কলকাতা: প্রায় আড়াই বছর পরে বউবাজারে (Bowbazar Incident) ফিরল সেই পুরনো আতঙ্ক। মেট্রোর (Metro Construction) কাজ চলাকালীন বউবাজারে ফের ফাটল। সন্ধে থেকে বউবাজারের বেশ কয়েকটি বাড়িতে ফাটল ধরেছে বলে অভিযোগ। তাতে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে উদ্যত হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এই ঘটনায় আড়াই বছর আগের সেই স্মৃতি ফিরে এসেছে, যখন বাড়ি ছাড়তে হয়েছিল বহু মানুষকে। এ দিনও ফাটল দেখা দেওয়ায় দলে দলে মানুষ বাড়ি ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। 


২০১৯-এর ভয়াবহ স্মৃতি ফিরল বউবাজারে


বুধবার সন্ধেয় ২০১৯-এর অগাস্ট মাসের সেই দুঃসহ স্মৃতি ফিরল বউবাজারে। এ বারও ঘটনাস্থল সেই দুর্গাপিতুরি লেন। মেট্রোর কাজ চলাকালীন সেই সময় কমপক্ষে ৪০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভেঙে দিতে হয় বেশ কয়েকটি বাড়িও। তাতে দলবলে বাড়ি ছেড়ে অস্থায়ী ঠিকানায় মাথা গোঁজেন স্থানীয়রা। 


এ দিন সন্ধেয় সেই একই গটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছে বলে খবর। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মেট্রোর কাজ চলাকালীন এ দিন কমপক্ষে ১০টি বাড়িতে ফাটল দেখা দেয়। শুধু বাড়িই নয়, রাস্তাতেও ফাটল ধরেছে। ফলে আতঙ্কে বাড়ি ছাড়তে শুরু করেছেন স্থানীয়দের অনেকেই। 



এ দিন খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে যান স্থানীয় কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে। মেট্রোের কর্তারাও এলাকায় এসেছিলেন বলে জানা গিয়েছে। তবে এই নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি তাঁরা। এবিপি আনন্দের ক্যামেরার মুখোমুখি হয়ে বিশ্বরূপবাবু বলেন, "আমি যেটুকু খবর পেয়ে ছুটে এসেছি, বিকেলের অল্প ফাটল ছিল। সন্ধের পর থেকে ফাটল বাড়ছে। অন্তত ১০-১২টি বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। রাস্তাতেও ফাটল ধরেছে। আমি বুঝতে পারছই না, ২০১৯-এ এত বড় বিপর্যয়ের পর, কাজ হচ্ছে অথচ সাইটে কেউ নেই। তাদের ইঞ্জিনিয়ারের তো ২৪ ঘণ্টা থাকা উচিত! মেট্রো কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কিন্তু তাদের কাউকে এখনও দেখতে পাচ্ছি না। একজন ইঞ্জিনিয়ারও নেই। কাউকে চোখে দেখছি না এখনও। কলকাতা পুলিশ রয়েছে, স্থানীয় মুচিপাড়া থানার পুলিশ রয়েছে। কিন্তু মেট্রোর লোকজন কোথায়! তাঁরা তো টেকনিক্যাল লোক! আমি তো তা নই।"


শুধু তাই নয়, ২০১৯ সালে যে বাড়িগুলিতে ফাটল ধরেছিল, এ দিনও সেই বাড়িগুলিতেই ফাটল ধরেছে। তাহলে সেই সময় ঠিক করে বাড়ি সংস্কার করা হয়নি কিনা, প্রশ্ন উঠছে। তাতেও মেট্রো কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা।


মেট্রোর তরফে কেউ উপস্থিত ছিলেন না বলে অভিযোগ


ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন বিশ্বরূপবাবু। এলাকায় মোতায়েন রয়েছে পুলিশ। মাইকিং করে স্থানীয়দের সতর্ক করা হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, বাড়িতে থাকতে ভরসা পাচ্ছেন না তাঁরা। তাই যা কিছু পেরেছেন, গুছিয়ে বেরিয়ে এসেছেন। দরকারি কাগজপত্র নিয়ে বেরিয়েছেন। মেট্রো কর্তৃপক্ষ যেখানে থাকার ব্যবস্থা করবেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা। কাউন্সিলর নিজেও তাদের আশ্বস্ত করেছেন বলে জানিয়েছেন। এর আতগে ২০১৯ সালে তিন মাস হোটেলে থাকতে হয়েছিল, এ বারও তেমন হতে পারে আঁচ করেই বেরিয়েছেন তাঁরা। খবর পাওয়ার ঢের পরে মেট্রোর তরফে এক আধিকারিক এবং এক ইঞ্জিনিয়ার ঘটনাস্থলে হাজির হন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। বউবাজার এলাকায় স্বর্ণ ব্যবসায়ী এবং কারিগরদের একটি বড় অংশ রয়েছেন। এর আগে  ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল তাঁদের। এ বারও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন তাঁরা।