পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা: দুই পাশে দুটি বহুতল। মাঝে এক চিলতে জায়গা। সেইখানেই গজিয়ে উঠেছে বহুতল। যা চওড়ায় চার ফুটও নয়। ছবিটা গার্ডেনরিচের,যেখানে কদিন আগেই ধসে (Kolkata Building Collapase) পড়েছে একটি নির্মীয়মাণ বহুতল, প্রাণ গিয়েছে ১০ জনের। এমন অনিয়ম দেখেও কীভাবে চুপ করে থাকল পুরসভা ও প্রশাসন? উঠছে প্রশ্ন।    


নিজের বাড়ির স্বপ্ন সকলেরই থাকে। সাধ্যমতো ক্ষমতায় নিজের জন্য বাড়ি তৈরি করতে চান অনেকে। কিন্তু তাই বলে নিরাপত্তার ব্যবস্থায় খতিয়ে দেখতে হয়। মাথার উপর ছাদ যাতে প্রাণহানির কারণ না হয় সেটা দেখতেই হয়। কিন্তু সেই ছবি দেখা যায়নি গার্ডেনরিচে।      


খাস কলকাতার বুকে, একফালি বাড়ি। বাঁকা-একটেরে, সেখানেই বাস নাগরিকদের। যেন ঝুঁকি নিয়ে প্রতি মুহূর্তে জীবন কাটানো। গার্ডেনরিচের  বাসিন্দা এম এস আলম বলেন, 'সবথেকে ডেঞ্জারাস মোল্লা বাগানের মোড়ে যে বিল্ডিং রয়েছে, ওই বিল্ডিং যদি পড়ে যাবে, কয়েক হাজার মানুষ মরে যাবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অ্যাকশন নিতে হবে।'


গার্ডেনরিচে (Garden Reach Building Collapse) এমন একটি আবাসনের কথা বলা হচ্ছে যা মাটিতে দাঁড়িয়ে দুহাতের বেরের মধ্যে চলে আসে। মাত্র ৪ থেকে সাড়ে ৪ ফুট জমির ওপর তৈরি এই আবাসন। দুপাশের ২টি আবাসনের মাঝখান দিয়ে মাথা তুলেছে এই বহুতল। এ যেন চিঁড়ে চ্য়াপ্টা হওয়ার জোগাড়। এই বিপজ্জনক বাড়িও সেই গার্ডেনরিচেরই পাহাড়পুর যেখানে তাসের ঘরের মতো বিল্ডিং ভেঙে ১০জনের মৃত্য়ু হয়েছে। সেই দুর্ঘটনাস্থল থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে, নিয়মকানুন শিকেয় তুলে গার্ডেনরিচেরই ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের আজহার মোল্লাবাগানে হেলে রয়েছে এই বিল্ডিং।


সব দেখেও কীভাবে চুপ পুরসভা-প্রশাসন? (Garden Reach Incident) এই বাড়িটি নিয়ে প্রশ্ন করতেই কলকাতা পুরসভার ১৫ নম্বর বরো চেয়ারম্যান ও তৃণমূল নেতা রঞ্জিত শীল বলেন, 'হতে পারে কি হতে পারে না, সেটা আমি বলতে পারছি না। আপনি ফিজিক্যালি যেটা পেয়েছেন, সেটা তো আপনি নিজেই চোখে দেখেছেন।' তাহলে কি নজরদারি হয় না? রঞ্জিত শীল বলেন, 'আমি ডেইলি সকালবেলা রাউন্ড দিই। এক রাউন্ড, এক ঘণ্টা। তারপর অন্য সব কাজ করি। সব কাউন্সিলররা যদি এরকম অ্যাকটিভভাবে রাউন্ড দিত, তাহলে এই জিনিস হত না।'


বেআইনি বহুতলের দায় কি তাহলে কার্যত দলের কাউন্সিলরদের ঘাড়েই চাপালেন বরো চেয়ারম্যান? দায় ঠেলাঠেলির এই খেলায় আর কত প্রাণ বলি হবে? 


আরও পড়ুন: প্রথমবার UPSC দিয়েই সারা ভারতে ব়্যাঙ্ক ৯৪, কীভাবে সফল হলেন তমালি?