কলকাতা : শিক্ষক বদলি মামলার (Teachers Transfer Case) সংখ্যায় বিরক্ত কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) । 'সবার লক্ষ্য কলকাতা বা তার আশেপাশে বদলি। এত আবেদন আসছে যে গ্রামের স্কুল ফাঁকা হয়ে যাবে।' আজ এমনই মন্তব্য করেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। এব্যাপারে রাজ্যের নীতি জানতে চাইলেন বিচারপতি।


আদালতে দাখিল হওয়া রাজ্যের রিপোর্ট দেখে বিচারপতি বসু মন্তব্য করেন, কলকাতায় ১১৫টি স্কুল আছে যেখানে ৫০০-র বেশি শিক্ষক আছেন, কিন্তু স্কুল প্রতি ৫০ জনের কম পড়ুয়া। ছাত্র রয়েছে এমন স্কুলে বদলির আবেদনও শুনতে হয়েছে !' পাশাপাশি তাঁর পর্যবেক্ষণ, "যদি রাজ্যের মনে হয় শিক্ষক বেশি হয়ে গেছে, তাহলে নতুন নিয়োগ কেন ? যেখানে ছাত্র নেই সেখানকার শিক্ষকদের অন্য স্কুলে পাঠানো হোক।' এই বিষয়ে নীতি তৈরিতে রাজ্যের বাধা কোথায় ?, রাজ্যকে প্রশ্ন বিচারপতির। 


বিচারপতি আজ যে মন্তব্য করেছেন, গত জুলাই মাসে সেরকমই একটি ঘটনার প্রতিফলন দেখা যায় নদিয়া জেলায়। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলি রুখতে স্কুলে তালা দিয়ে বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়া ও অভিভাবকরা। নদিয়ার (nadia) তেহট্টের সাদিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ঘটনা। পরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি সামলান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা। 


কেন বিক্ষোভ?
 
বিক্ষোভকারী এক পড়ুয়া আরজানা খাতুন জানান, স্কুলে পড়ুয়াসংখ্যা বারোশোর বেশি। তাদের জন্য আগে ১৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা থাকলেও সম্প্রতি ৩ জন বদলি হয়ে চলে গিয়েছেন। ফলে এমনিতেই ক্লাস করানো কঠিন। তার উপর আরও কয়েকজন শিক্ষক বদলির আবেদন জানান। সেই আবেদন মঞ্জুর হয়ে গেলে স্কুলের পঠনপাঠন শিকেয় উঠবে, এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করেন পড়ুয়ারা।


আরজানার অভিযোগ, 'লকডাউনে এমনিতেই লেখাপড়া ঠিকঠাক হয়নি। স্কুল খোলার পর অন্তত তা ঠিকঠাক হবে বলে আশা করেছিলাম। কিন্তু এবার আরও কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষিকাও বদলি নিয়ে চলে গেলে পড়াশোনা হবে কী ভাবে? আমাদেরও শিক্ষা চাই। আমরা গ্রামের ছেলেমেয়ে বলে কি শিক্ষা পাব না?' পড়ুয়াদের প্রতিবাদে সামিল হন তাদের অভিভাবকরাও।  


সমস্যার জন্য নিয়োগ-প্রক্রিয়ায় বিলম্বকেই দায়ী করেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সৌমী কুণ্ডু। তাঁর প্রশ্ন, '২০১৬ সালে শেষ এসএসসি পরীক্ষায় নিয়োগ হয়েছে। এখন ২০২২ সাল। এর মধ্যে কোনও নিয়োগ হয়নি না কেন? এর দায়ভার কি ছাত্ররা বহন করবে? করোনার সময় গত দুবছর গ্রামাঞ্চল থেকে স্কুলছুট হয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়মিত হলে এই সমস্যা তৈরি হত না।'


আরও পড়ুন ; তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরেই বিষপান করা শিক্ষিকাদের বদলি বাতিল !