কলকাতা : তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরেই বিষপান করা শিক্ষিকাদের বদলি বাতিল। দূরের জেলায় বদলির প্রতিবাদে বিকাশ ভবনের সামনে বিষপান করেছিলেন তাঁরা শিশু-মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রের ৫ শিক্ষিকা। পরে ৫ শিক্ষিকা-সহ আন্দোলনকারীরা যোগ দেন তৃণমূলে। আজই ৫ শিক্ষিকা-সহ ৭জনের বদলি বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা ‘ক্ষমা চেয়ে অনুরোধ করেছিলেন, তাই বদলি বাতিল।’ আবেদনের ভিত্তিতে বদলি বাতিল করা হয়েছে বলে দাবি সরকারি সূত্রের।


মাস কয়েক আগে সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের পাঁচ শিক্ষিকা। বিক্ষোভের সময় বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছিলেন তাঁরা। সে দিন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর (Bratya Basu) বাড়ির সামনেও বিক্ষোভ চালান। সম্প্রতি তৃণমূলে যোগ দেন ওই পাঁচ জন। ব্রাত্য বসুই তাঁদের হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দেন।


সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমে বিষপানকারী শিক্ষিকারা শেষমেষ তৃণমূলে   (TMC) যোগ দেন। ডায়মন্ডহারবারে যোগদান অনুষ্ঠান হয়। ডায়মন্ড হারবারে তৃণমূলের সভাতেই যোগ দেন শিক্ষক নেতা মইদুল ইসলামও (Maidul Islam)।


আরও পড়ুন ; তৃণমূলে যোগ দিলেন বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করা ৫ জন-সহ দু-হাজার শিক্ষিকা


গত ২৪ অগাস্ট বিক্ষোভ-প্রতিবাদের মাঝে হঠাৎই ‘বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা’ করেন ৫ শিক্ষিকা। যে পাঁচ শিক্ষিকা বিষ খেয়ে আত্মহত্যার (Suicide) চেষ্টা করেছিলেন, তাঁরা সকলেই পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal) শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের সদস্য। বদলি-সহ একাধিক দাবি নিয়ে বিকাশ ভবনের (Bikash Bhawan) সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন শিক্ষক ঐক্য মঞ্চের সদস্যরা। আন্দোলন চলাকালীন বিকাশ ভবনের সামনে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি বাধে। ধস্তাধস্তিতে বিকাশ ভবনের মূল ফটক টপকে ভেতরে ঢুকে পড়েন ওই পাঁচ শিক্ষিকা। এরপরই কার্যত সকলকে অবাক করেই হাতে থাকা বোতল থেকে বিষ খেতে শুরু করেন তাঁরা। যা দেখতে পেয়ে দ্রুত পরিস্থিতি সামাল দেয় পুলিশ। সঙ্গে সঙ্গে ওই পাঁচ শিক্ষিকাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রথমে তাঁদের বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে (Bidhannagar Sub-Divisional Hospital) নিয়ে যাওয়া হয়। ৩ শিক্ষিকাকে নিয়ে যাওয়া হয় এনআরএস হাসপাতালে (NRS Hospital)।  ওই পাঁচ শিক্ষিকার বিরুদ্ধে পুলিশ জামিন অযোগ্য ধারায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে। তাঁরা সকলেই বেশ কিছুদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।


এরপর ওই শিক্ষিকারা অভিযোগ করেন বিক্ষোভ-প্রতিবাদে সামিল হওয়ার জেরে তাদেরকে বদলি করে দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে অনেকেই চুক্তিভিত্তিক শিক্ষিকা। তাঁরা অভিযোগ করেছিলেন, দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকদের উত্তরবঙ্গে বদলি করে দেওয়া হয়। রাজ্য সরকারের উৎসশ্রী পোর্টাল চালুর পর থেকে বদলির যে সমস্ত সমস্যা বেড়েছে। যদিও এই প্রথম নয়, শিক্ষকদের (Teacher) বেতন বৈষম্য, বদলি-সহ একাধিক দাবিতে কখনও নবান্নে, কখনও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর (Bratya Basu) বাড়ির সামনে তো কোনওদিন বিকাশ ভবনের সামনে একাধিকবার বিক্ষোভ-প্রতিবাদ দেখিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের সদস্যরা। উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর ধরে শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মইদুল ইসলাম। বিধাননগরে একাধিকবার আন্দোলন অনশনে বসেছে এই সংগঠন। নিজেদের দাবি নিয়ে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) সঙ্গেও বৈঠক করেছিলেন শিক্ষকরা।