সমীরণ পাল , উত্তর ২৪ পরগনা : এবার ডিজিটাল  অ্যারেস্টের শিকার রেলের অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার! এক কোটিরও বেশি টাকা খোয়ালেন তিনি। গত বছর থেকেই সারা দেশ জুড়ে একের পর এর শিকার ধরতে শুরু করে সাইবার অপরাধীরা। নিজেদের গোয়েন্দা, পুলিশ, বিচারক ইত্যাদি পরিচয় দিয়ে  ওপারের মানুষটিকে নানা কথা ভয় দেখিয়ে , তাকে ধনে প্রাণে লুটে নেওয়ার ঘটনা ঘটে ভূরি ভূরি। সাইবার অপরাধীদের পাতা ফাঁদে পড়েন বহু শিক্ষিত মানুষও। মূলত বয়স্কদের টার্গেট করে তাদের নিঃস্ব করে দেয় এই এই সব দুষ্টচক্র। ডিজিট্যাল অ্যারেস্ট নিয়ে সাধারণ মানুষকে নানাভাবে সতর্ক করেছিল সরকারও। 'মন কি বাত' অনুষ্ঠানে এই নিয়ে মুখ খুলেছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও । তা সত্ত্বেও এমন ঘটনা থামছেই না।

বেলঘরিয়ার শীতলাতলা রোডের বাসিন্দা সুশান্তকুমার আচার্য। তাঁর দাবি, ১৭ জুন থেকে ৪জুলাই পর্যন্ত তাঁকে ডিজিটালি অ্য়ারেস্ট করে রাখা হয়। দফায় দফায় হাতিয়ে নেওয়া হয় ১ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা।  সুশান্তকুমার আচার্য, বলেন, তাঁকে একেবারে পথে বসানো হয়েছে। দফায় দফায় টাকা নিয়েছে। আমি কিছু বুঝতেই পারিনি। অভিযোগকারীর দাবি,  প্রতারণার সূত্রপাত একটি ফোন কল থেকে।  ফোনে তাঁদের বলা হয়,  তাঁদের আধার নম্বর ব্য়বহার করে অ্য়াকাউন্ট খুলে, সেখান থেকে কোটি কোটি টাকা আর্থিক নয়ছয় করা হয়েছে। সেই ঘটনায় তাঁকে ডিজিটাল অ্য়ারেস্ট করা হচ্ছে। বেলঘরিয়ার বাসিন্দার দাবি, কখনও মুম্বই পুলিশ, কখনও CBI অফিসার পরিচয় দিয়ে তাঁকে ফোন করা হয়। ভয় দেখাতে বলা হয়, সর্বক্ষণ তাঁর উপর নজর রাখা হচ্ছে। দোকান-বাজার, এমনকী ঘুমোনোর সময়েও ভিডিও কল কিংবা ভয়েস কলের মাধ্য়মে তাঁকে যোগাযোগ রাখতে বলা হয়। অভিযোগকারীর দাবি, নির্দেশ মতো দফায় দফায় মোট ১ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা অনলাইনে বিভিন্ন অ্য়াকাউন্টে পাঠিয়েছেন তিনি। সুশান্তকুমার আচার্য জানান, তাঁকে বলা হয়, টাকাগুলো অ্য়াকাউন্ট ভেরিফিকেশনের জন্য় নেওয়া হচ্ছে। ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে। তাঁর সন্দেহ হয় যখন বলে টাকা ফেরত পাবেন তখনই যখন বাড়ি বন্ধক রাখবেন। অভিযোগকারীর স্ত্রী  অনিন্দিতা আচার্যর দাবি, 'আমাদেরকে তো প্রথমে কিছু বলেনি। আমার পরে জানতে পারি এসব হচ্ছে'। 

অভিযোগকারীর দাবি, প্রথমে লালবাজারে অভিযোগ জানান তিনি। সেখান থেকে বেলঘরিয়া থানায় তাঁকে অভিযোগ জানাতে বলা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, ইতিমধ্য়েই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে ব্য়ারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগ।