কলকাতা: হু হু করে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ (COVID Cases)। কলকাতার ৭টি বরো এলাকায় এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি। এমন পরিস্থিতিতে শহরের ২৩টি এলাকাকে চিহ্নিত করে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন (Micro Containment Zone) করার প্রস্তাব দিল কলকাতা পুরসভা (Kolkata Municipal Corporation/KMC)। সংক্রমণ রুখতে কনটেনমেন্ট কিংবা মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন অত্যন্ত সহায়ক হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ-চিকিৎসকরা।
করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পরার পরে কনটেনমেন্ট ও মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন তৈরি করে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছিল প্রশাসন। এখন রাজ্য হোক বা কলকাতা যে ভাবে করোনা দুরন্ত গতিতে বাড়ছে এবং উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ওমিক্রন, তার মোকাবিলায় কলকাতায় ফিরতে চলেছে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন।
করোনা সংক্রমণ বাড়লে, প্রয়োজনে কনটেনমেন্ট জোন করার কথা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। যেখানে একসঙ্গে ৫-৬ করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলবে, সেই এলাকাকে কনটেনমেন্ট জোন ঘোষণা করা হবে বলে শুক্রবার জানান মেয়র ফিরহাদ হাকিমও (Firhad Hakim)। সেই মতো এলাকা চিহ্নিত করতে শুরু করেছে কলকাতা পুরসভা। কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, আক্রান্তের সংখ্যা ৫ বা তার বেশি, এরকম ২৩টি জায়গাকে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: COVID Variant Omicron: রাজ্যে ওমিক্রন সংক্রমিত আরও ৩, একজন ওড়িশায়
কলকাতা পুরসভার প্রস্তাবিত মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোনের তালিকার ওপরের দিকে রয়েছে বেলভেডিয়ার রোডের একাংশ। সেখানে এখনও পর্যন্ত ১৫ জন করোনায় আক্রান্ত বলে খবর। কলকাতা পুরসভার তথ্য অনুযায়ী, যে যে এলাকাগুলিকে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, তার মধ্যে, ক্যানাল রোডের একাংশে ৮ জন করোনায় আক্রান্ত। নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু রোডের একাংশে সংক্রমিতের সংখ্যা ৭। পণ্ডিতিয়া রোড এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা ৬ এবং বালিগঞ্জ পার্ক রোড এলাকায় ৬ জন করোনায় আক্রান্তের হদিশ মিলেছে।
পুরসভার তথ্য অনুযায়ী, কলকাতার ৭টি বরো এলাকায় সংক্রমণ প্রবলভাবে ছড়িয়েছে, যার মধ্যে আছে, ১, ২, ৫, ৭, ৮, ৯ ও ১০ নম্বর বরো। মধ্য ও দক্ষিণ ৯ নম্বর বরোর পরই সবচেয়ে বেশি কনটেনমেন্ট জোন করার প্রস্তাব দিয়েছে পুরসভা। ৭ নম্বর বরো এলাকায় ৬টি মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এই এলাকায় পড়ে পার্কস্ট্রিট ও সংলগ্ন এলাকা। ১০ নম্বর বরোয় ৩টি মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে পুরসভা।
এর পাশাপাশি নিউ আলিপুরের একাংশ, তিলজলার একাংশ, উত্তর কলকাতার হাটখোলা, আমহার্স্ট স্টিটের একাংশ, শিয়ালদার রেলওয়ে অফিসার্স কলোনি-সহ মোট ২৩ টি জায়গাকে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন করার জন্য চিহ্নিত করেছে পুরসভা।
একটা কোনও ফ্ল্যাট, একটা কোনও বিল্ডিং, বা স্কুল, যেখানে একাধিক করোনা পজিটিভ রোগী থাকেন, সেটাকে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন হিসেবে না ধরা হয়। কারণ সেখান থেকেই গোষ্ঠী সংক্রমণ ছড়াতে পারে। করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার আশঙ্কা ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে। তাই পরিস্থিতি মোকাবিলায় শহরে ফিরতে চলেছে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন।