ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা: সোশাল মিডিয়ায় ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে অভিনব কায়দায় ব্ল্যাকমেল (Blackmail) করার অভিযোগ। লালবাজার (Lal Bazar)সূত্রে খবর, গত কয়েক মাসে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়েছে পুলিশের কাছে।  ব্ল্যাকমেলের শিকার টালিগঞ্জের বাসিন্দা এক ব্যবসায়ী।  ওই ব্যবসায়ীর দাবি, কয়েক দিন আগে তিনি ফেসবুক (Facebook)খোলার পর অচেনা নম্বর থেকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠানো হয়।  তিনি প্রথমে আমল না দিলেও বারবার রিকোয়েস্ট আসতে থাকে। ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট যিনি পাঠাচ্ছেন, তাঁর পরিচয় জানতে চান ব্যবসায়ী। এরপর আচমকা একটি ভিডিও কল আসে ব্যবসায়ীর মোবাইল ফোনে। অভিযোগ, সেই ভিডিও কলে এক মহিলা অশালীন পোশাকে ছিলেন। ব্যবসায়ী ভিডিও কল কেটে দেন। অভিযোগ, তারপরই তাঁকে ফোন করে বলা হয়, দিল্লির সফদরজং থানা থেকে ফোন করা হচ্ছে। হুমকি দেওয়া হয়, ভিডিও কলের ওই মহিলার সঙ্গে তাঁর অশালীন ছবি পুলিশের হাতে রয়েছে। টাকা চাওয়া হয় ব্যবসায়ীর কাছ থেকে।  

 অভিযোগকারী ব্যবসায়ী জানান, বারবার তাঁর কাছে টাকা চেয়ে ফোন আসছে। তাঁর কাছে টাকা চাওয়া হয়। তাঁর দাবি, হঠাতই অশালীন অবস্থায় এক মহিলার ছবি ভেসে ওঠে চ্যাট উইনডোয়। প্রথমে থতমত খেয়ে গেলেও, প্রায় সাথে-সাথেই কল কেটে দেন ওই ব্যক্তি। তারপর থেকেই আসতে শুরু করেছে ব্ল্যাকমেলিং-এর মেসেজ। 



আরও পড়ুন : Cyber Insecurity: অনলাইনে লেনদেন করতে গেলেই আতঙ্ক? হ্যাকার ফোবিয়া কাটাবেন কী করে?


 


একইভাবে ব্ল্যাকমেলের শিকার বরানগরের বাসিন্দা এক কলেজ ছাত্রও।   তাঁর দাবি, তিনি ঘুরতে যাবেন বলে গুগল-এ ডেস্টিনেশন সার্চ করছিলেন। তারপর ফেসবুক খোলেন।  এক্ষেত্রেও একইভাবে প্রথমে তাঁর কাছে মেসেজ আসে। তারপর আসে প্রায় নগ্ন এক মহিলার ভিডিও কল। এরপরই হুমকি দেওয়া হয়, মহিলার সঙ্গে ওই ছাত্রের অশালীন ছবি রয়েছ।  ২০ হাজার টাকা না দিলে সেই ছবি ফাঁস করে দেওয়া হবে। 


অর্থাত্‍, দুটি ঘটনাতেই মোডাস অপারেন্ডি একই।  বিষয়টি কলকাতা পুলিশেরও অজানা নয়।  তাঁদের কাছে এই ধরনের অভিযোগ এখন জমা পড়ছে। বুধবার কলকাতা পুলিশের কমিশনার সৌমেন মিত্র বলেন, তাঁরা বিষয়টি জানেন। দেখছেন বলে আশ্বাসও দেন পুলিশকর্তা। লালবাজার সূত্রে খবর, এইভাবে ছবি মর্ফ করে ব্ল্যাকমেলের চক্র চালায় রাজস্থানের একাধিক গ্যাং।  

কেউ কেউ গ্রেফতার হয়েছে। আবার অনেকে ধরাও পড়েনি। পুলিশ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, এই ধরনের বিপদ থেকে বাঁচতে সোশাল মিডিয়ায় অচেনা কারও সঙ্গে যোগাযোগ না করাই ভাল।  কিন্তু করোনাকালে যেহেতু সকলেই একটা খোলা জানলা চাইছেন, তাই সোশ্যাল মিডিয়ার বন্ধুত্ব থেকে সরে আসাটা অনেকের কাছেই বড় চ্যালেঞ্জ।