ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: ডেঙ্গি (Dengue Survivor) থেকে সেরে ওঠার পরও, অনেকেরই বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে। কিন্তু এবার ডেঙ্গি পরবর্তী এক বিরল রোগে আক্রান্ত হলেন উত্তর ২৪ পরগনার গারুলিয়ার বাসিন্দা এক ব্যক্তি (Dengue Situation)। চিকিত্‍সকদের সহায়তায় কার্যত মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এলেন তিনি (Kolkata News)।


ডেঙ্গি পরবর্তী বিরল রোগে আক্রান্ত হলেন উত্তর ২৪ পরগনার গারুলিয়ার বাসিন্দা


এ বছর ডেঙ্গির দাপটে কার্যতই অস্থির জনজবীন। ডেঙ্গি, কখনও কেড়েছে প্রাণ। কখনও ডেঙ্গি থেকে সেরে ওঠার পরও, শরীরে দেখা দিয়েছে মারাত্মক কিছু উপসর্গ। এ বার ডেঙ্গির কারণে বিরল ও ভয়াবহ এক রোগের শিকার হলেন এক ব্যক্তি। পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে অসাড় হয়ে পড়ল সারা শরীর। 


প্রায় ১ মাস যমে-মানুষে টানাটানির পর, কার্যত মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন উত্তর ২৪ পরগনার গাড়ুলিয়ার বাসিন্দা, পিন্টু রজক। তাঁর বয়স ৪৪  বছর। পরিবার সূত্রে খবর,  গত ২৬ অক্টোবর তাঁর জ্বর আসে। কয়েকদিনে জ্বর না কমায়, ডেঙ্গি পরীক্ষা করান। তাতে গত ১ নভেম্বর ডেঙ্গি রিপোর্ট পজিটিভ আসে। 


আরও পড়ুন: Anubrata Mandal: মামলায় অভিযুক্ত নন, শুধু নাম রয়েছে, তাহলে কেন ১১০ দিন জেলে! প্রশ্ন অনুব্রতর আইনজীবীর


এর পর ব্যারাকপুরের বিএন বসু মহকুমা হাসপাতালে ওই ব্যক্তির চিকিত্‍সা চলছিল। কিন্তু দেখা যায়, জ্বর কমলেও, সারা শরীর পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েছে তাঁর। হাত, পা, মুখ, চোখ সহ সারা শরীর অসাড়, এমনকি নিঃশ্বাসটুকুও নিতে পারছিলেন না ওই ব্যক্তি। 


তাতে গত ৮ তারিখ ওই ব্যক্তিকে স্থানান্তরিত করা হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। তখন তিনি অচৈতন্য। CT SCAN, MRI-এর পর, চিকিত্‍সকরা দেখেন, ডেঙ্গি-র আক্রমণেই বিরল, ভয়াবহ অসুখে আক্রান্ত হয়েছেন তিনি।  অসুখটির নাম, Post dengue Acute disseminated encephalomyelitis and Guillain–Barré syndrome (পোস্ট ডেঙ্গি অ্যাকিউট ডিসেমিনেটেড এনসেফ্যালোমায়লাইটিস অ্যান্ড গুলেনবেরি সিনড্রোম)। সংক্ষেপে, POST Dengue ADEM Guillain–Barre' Syndrome.


সেটি একটি অত্যন্ত বিরল অসুখ। সাধারণরত, ভাইরাস আক্রান্তের পর, Gullenberi Syndrome দেখা যায়। চিকিত্‍সকরা জানাচ্ছেন, 
কার্যত কোমায় চলে গিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। Glasgow coma স্কেলে রেটিং ছিল ৩। তবে, চিকিত্‍সকদের তত্‍পরতায় কোমার থেকে বেরিয়ে এসেছেন তিনি। 


এ নিয়ে চিকিৎসক বোধিব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "ডেঙ্গি পরবর্তী সময়ে এই সিনড্রোম আগে পাননি। প্রাণঘাতী। সময়ের মধ্যে চিহ্নিত, তাই বাঁচাতে পেরেছেন।"


ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছেন পিন্টু, অল্পদিনের মধ্যেই ছেড়ে দেওয়া হবে


পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে, প্রথমে শুয়েই ছিলেন ওই ব্যক্তি। অনেক চেষ্টার পর উঠে বসেন। তার পর, ওয়াকারের সাহায্যে হাঁটানোর চেষ্টা করা হয়। এই মুহূর্তে সাহায্য ছাড়া একাই হাঁটার চেষ্টা করছেন পিন্টু রজক। মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে, নতুন জীবন ফিরে পেয়েছেন তিনি। তাঁকে সুস্থ হতে দেখে স্বস্তিতে পরিবারও। অল্পদিনের মধ্যেই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।