কলকাতা: উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম- বেজে গেছে বিসর্জনের বাজনা। ছেলেমেয়ে নিয়ে বাপের বাড়ি থেকে কৈলাসে পাড়ি উমার। আনন্দে উচ্ছ্বাসে মিশেছে বিষণ্ণতার সুর। রীতি মেনে সকালে ঘট বিসর্জন। এরপর সিঁদুরখেলা গঙ্গার ঘাটে মা-কে বিদায় জানানো। কোলাকুলিতে হয় শুভেচ্ছা বিনিময়, মিষ্টিমুখ। হাসি মুখে মাকে বিদায় জানিয়ে আরও একটা বছরের অপেক্ষা। এখন শুধু দু’চোখ ভরে মাকে দেখে নেওয়া আর ঢাকের তালে বলে ওঠা, আসছে বছর আবার এসো মা।
কিন্তু কলকাতার উন্মাদনা অন্যরকমই আজও। সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার থেকে দক্ষিণের দেশপ্রিয় পার্ক, লেকটাউনের শ্রীভূমি, কিংবা বেহালার পুজো- সর্বত্র আজও জনস্রোত। উৎসব শেষ হলেও রয়েছে পুজোর রেশ। আজ যে দশমী তা আজ বোঝার উপায় নেই এই পুজো প্যান্ডেলগুলি দেখে। দশমীর রাতেও মণ্ডপে মণ্ডপে উপচে পড়া ভিড়।
সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের 'অপারেশন সিঁদুর' থিমের পুজো দেখতে জনজোয়ার আজও। সজল ঘোষের এই পুজো নিয়ে প্রথম থেকেই পুলিশের সঙ্গে বিতর্ক চলছিল ক্লাব কর্তাদের। ব্যারিকেড লাগিয়ে ভিড় ঘুরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। যদিও মানুষের ঢল তাতে কমেনি। পুজোর সবক'টি দিন তো বটেই, এমনকি দশমীতেও তুমুল ভিড় দেখা গেল এই পুজো প্যান্ডেলে।
হাসি মুখে ঘরের মেয়েকে বিদায় জানানোর পালারদিনে একাধিক ক্লাবে আজ রীতি মেনে দর্পণ বিসর্জন হলেও, প্রতিমা নিরঞ্জন হয়নি বেশিরভাগ প্যান্ডেলেই। সকালে মায়ের বরণ সেরে সিঁদুর খেলায় মেতেছিলেন মহিলারা৷ তবে বিকেল হতেই একাধিক প্যান্ডেলে জনজোয়ার চোখে পড়ার মতো। এদিকে বৃষ্টির ভ্রুকুটি রয়েছে দক্ষিণভাগে। নবমীর রাতে বা দশমীর সকালে একাধিক জায়গায় বৃষ্টি হলেও বিকেলের পড়ে এখনও বৃষ্টি নামেনি শহরে। ফলে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত উৎসবের শেষদিনের আনন্দটুকু ভাগ করে নিচ্ছে সকলে।
রাত বাড়তেই আজ মানুষের ঢল নেমেছে শহরের রাস্তায়। দশমীতে বিষাদের মধ্যেই উন্মাদনাও প্রবল। দশমীর দিন যেন অষ্টমী-নবমী নিশির মতোই। একাধিক পুজো প্যান্ডেলে ৪ তারিখ হবে প্রতিমা নিরঞ্জন। ফলে আরও ২টো দিন থাকবে ঠাকুর। এই সুযোগই মিস করতে চাইছেন না কেউই।