কলকাতা: বাইপাসের ধারে ঝুপড়িতে ভয়াবহ আগুন। সর্বস্বান্ত ঝুপড়ির বাসিন্দারা। অ্যাডমিট কার্ড, বই-খাতা পুড়ে ছাই এক উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরও। কী ভাবে আগুন লাগল, তা স্পষ্ট নয়। ঘটনাস্থলে রয়েছে দমকলের পাঁচটির বেশি ইঞ্জিন। এখনও আগুন নেভানোর চেষ্টা চলছে। আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগিয়েছেন স্থানীয়রাও। তবে কিছুই বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই।। আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। (Kolkata Fire)
ইম বাইপাসের ধারে, আনন্দপুরে ফর্টিস হাসপাতালের ঠিক পিছন দিকের ঝুপড়িতে রবিবার সকালে আগুন লাগে। প্রথমে একটি ঝুপড়িতে আগুন লাগে, তার পর নিমেষের মধ্যে পাশের ঝুপড়িগুলিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ওই ঝুপড়িবাসীদের অনেকেই খাবারের দোকান চালাতেন। চা এবং খাবার বিক্রি করতেন রাস্তার ধারেই। তাই গ্যাস সিলিন্ডার, স্টোভ মজুত ছিল প্রায় সব ঝুপড়িতেই। (EM Bypass Slum Fire)
তাতেই ভয়াবহ আকার ধারণ করে আগুন। বিস্তীর্ণ এলাকায় আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে চোখের নিমেছে। তীব্র শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে এক একের পর এক গ্যাস সিলিন্ডারে। এদিন সকাল থেকেই হাওয়ার দাপট ছিল। তার জেরে আরও ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করে আগুন, তাতে সর্বস্ব খুইয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। কোনও রকমে প্রাণ হাতে করে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: Kolkata Fire: ফর্টিস হাসপাতালের সামনে ভয়াবহ আগুন, পরপর বিস্ফোরণে কাঁপছে এলাকা
চোখের সামনে সবকিছু ছাই হয়ে যেতে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন বাসিন্দারা। উচ্চমাধ্যমিকের এক পড়ুয়া বলেন, "আমাদের অ্যাডমিট কার্ড, রেজিস্ট্রেশন কার্ড, সব ভিতরে রয়েছে। এখনও ইতিহাস পরীক্ষা বাকি। কী করে পরীক্ষা দেব?" জানা গিয়েছে, রবিবার সকালে আগুন যখন লাগে, অনেকেই ঝুপড়িতে ছিলেন না। বাজার করতে গিয়েছিলেন কেউ, কেউ বেরিয়েছিলেন অন্য কাজে। এসে দেখেন সব শেষ। অর্থাৎ কিছু বের করে আনার সুযোগও মেলেনি।
কী থেকে আগুন লাগল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে দমকলের তরফে জানানো হয়েছে, এলাকা জুড়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে দুই দিক থেকে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন তাঁরা, যাতে আগুন ছড়াতে না পারে। এর পর মাঝের অংশের আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়, তাতেই আগুনকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। এলাকার বাসিন্দারা প্রশাসনকেও কাঠগড়ায় তুলেছেন। তাঁদের দাবি, তাঁরা আগে অন্যত্র ছিলেন। এই এলাকায় সরকারই তাঁদের পুনর্বাসন দেয়। তার পর ১১ বছর কেটে গেলেও, বিকল্প ব্যবস্থা হয়নি। সেই অবস্থাতেই নিজেদের মতো করে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছিলেন তাঁরা। নগদ কিছু টাকা জমিয়ে রেখেছিলেন কেউ কেউ, নথিপত্র সব মজুত ছিল ওই ঝুপড়িতেই। কিন্তু ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সব শেষ হয়ে গেল।
অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছন এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ। স্থানীয়দের সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। কিন্তু তিল তিল করে যে সম্বলটুকু গড়ে তুলেছিলেন তার কী হবে, কোথায় থাকবেন, কী খাবেন, কী পরবেন, এই প্রশ্নের জবাব খুঁজছেন স্থানীয়রা।