কলকাতায় ভূমিকম্প, কেঁপে উঠল গোটা শহর। উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় ভূমিকম্প। সবথেকে বেশি ধাক্কা বোঝা গিয়েছে বহুতলগুলিতে। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ৫.৭।
ভূমিকম্পের উৎসস্থল বাংলাদেশ বলে খবর। বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা কেঁপে উঠেছে। কোচবিহারেও টের পাওয়া গেল কম্পনের ঝটকা। দক্ষিণ দিনাজপুরে টের পাওয়া গেছে ভূমিকম্প। মালদা ও নদিয়ার বিভিন্ন এলাকায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার শহরের কাছে ৫.৫ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) সংস্থা জানিয়েছে, কলকাতা এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের বেশ কয়েকটি অংশে কম্পন অনুভূত হয়েছে। ইউএসজিএস জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল ঢাকা থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে নরসিংদীতে এবং ভূমিকম্পের গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার। এখনও পর্যন্ত, ভূমিকম্পে কোনও হতাহত বা আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
কলকাতার ছবি
কলকাতায় ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বহু মানুষ বহুতল থেকে নিচে নেমে আসেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রিখটার স্কেলে এর মাত্রা যদি ৬ এর বেশি হয়, তাহলে তা প্রবল বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। কলকাতা শহর নরম পলিমাটির উপর অবস্থিত। মাটির নিচে আন্দোলন হলে টলে যেতে পারে উপরের বহুতলগুলি। তাতে ঘিঞ্জি এলাকায় বিপদ বাড়তে পারে। বিশেষত অবৈধভাবে নির্মিত বহুতলগুলি বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। কিছুদিন আগেই কলকাতা ও শহরতলিতে প্রচুর হেলা বাড়ির ছবি দেখা গেছিল। মাটি কেঁপে উঠলে সেই সব বাড়ির বিপদ সবচেয়ে বেশি বলে দাবি ভূতত্ত্ববিদদের। সচেতন না হলে ভবিষ্যতে বড় বিপদের আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক পার্থপ্রতিম বিশ্বাসের মতে, কলকাতায় এমন ভূমিকম্প যথেষ্ট চিন্তার কারণই। তিনি মনে করেন, রাজারহাট, বেহালা, নিউটাউনে যেভাবে নগরায়ন হয়েছে, তাতে ঝুঁকি বেড়েছে। পার্কস্ট্রিটেও কিছু অংশ আছে, যা রিস্ক-জোনে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উত্তরবঙ্গও রয়েছে ঝুঁকির মধ্যেই। । পাহাড়ের বুকে হোটেল, গাছ কাটার জেরে বিপদের মুখে রয়েছে দার্জিলিং, কালিম্পং সহ গোটা উত্তরবঙ্গই। ২০১৫ সালের এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে পুরভোটের দিন কেঁপে উঠেছিল কলকাতার মাটি। সেবার কম্পনের উৎসস্থল ছিল নেপাল। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৮। একাধিক বাড়িতে ফাটল ধরেছিল কলকাতায়! এবার এখনও ক্ষয়ক্ষতির খবর না পাওয়া গেলেও, এই ভূমিকম্পকে একটা ওয়ার্নিং বেল হিসেবেই দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।