ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, কলকাতা: ক্যাশব্যাকের টোপে মোবাইলে আসা লিঙ্কে ক্লিক করতেই বিপত্তি। টাকা চেয়ে হোয়াটস অ্যাপে ক্রমাগত ফোন, মেসেজে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ। কন্ট্যাক্ট লিস্ট হ্যাক করে পরিচিতদের কাছে পাঠানো হচ্ছে বিভিন্ন রকম মেসেজ, অভিযোগ গলফ গ্রিনের দম্পতির। ঘটনায় লালবাজারের সাইবার ক্রাইম শাখায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।


ক্যাশব্যাকের নামে সাইবার জালিয়াতির অভিযোগ। টাকা চেয়ে ব্ল্যাকমেল। পুলিশে অভিযোগ জানিয়েও থামেনি হুমকি। উঠল এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ! আকর্ষণীয় অফার হোক, কিংবা ক্যাশব্যাক। কেনাকাটার পর বাড়তি কিছু পেলে কেই বা নিতে চান না?  তেমনটাই হয়েছিল গল্ফগ্রিন থানা এলাকার বাসিন্দা দম্পতি দেবযানী ঘোষাল ও অর্জুন ঘোষালের সঙ্গে। 


ফেব্রুয়ারি মাসে মোবাইলে একটি মেসেজ আসে, আপনি ২ হাজার টাকা ক্যাশব্যাক পেয়েছেন। টাকা পেতে নীচের লিঙ্কে ক্লিক করতে হবে। অভিযোগকারিণীর দাবি, লিঙ্কে ক্লিক করলে একটি ওয়েবসাইট খুলে যায়। সন্দেহ হওয়ায় সেখান থেকে বেরিয়ে যান দেবযানী।



এরপরই হোয়াটস অ্যাপে অচেনা নম্বর থেকে ফোন-মেসেজ আসা শুরু হয়। অভিযোগ, কখনও ৬ হাজার কখনও ৭ হাজার টাকা চাওয়া হয়। না দিতে চাওয়ায় বলা হয় আপনার কন্ট্যাক্ট লিস্ট হ্যাক করা হয়েছে। 


মহিলার নামে বিভিন্ন মেসেজ তাঁর পরিচিতদের কাছে পাঠানো শুরু হয়। এরপর, লালবাজারের সাইবার ক্রাইম শাখায় অভিযোগ দায়ের করেন দম্পতি। অভিযোগকারিনী, দেবযানী ঘোষাল জানান, ''অশালীন ফটো মেসেজ আমার নামে পাঠাচ্ছে। টাকা চাওয়া হয়। এথিক্যাল হ্যাকিং নিয়ে পড়াশুনো করেছি। তবু ফাঁদে পড়লাম। পুলিশে অভিযোগের পরও থামেনি হুমকি। পরিচিতদের কাছে অশ্লীল ছবি পাঠায়।'' 


এ বিষয়ে সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন শুধু কন্ট্যাক্ট লিস্ট হ্যাক নয়, এভাবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও হ্যাক করা সম্ভব। কাজেই যেকোন লিঙ্কে ক্লিক করার আগে দু’বার ভাবুন। সাইবার বিশেষজ্ঞ সাম্যজিৎ মুখোপাধ্যায় বলছেন, ''নতুন ধরনের মানুষকে ফাঁদে ফেলার চক্র। ম্যালিসিয়াস লিঙ্ক। ফোন হ্যাক। কারও অ্যাটাক হলে ফোন ফর্ম্যাট করতে হবে। অচেনা লিঙ্ক করব না। ট্রেস করা খুব কঠিন। মানুষকেই সচেতন হতে হবে। কন্ট্যাক্ট লিস্ট হ্যাক করেছে। ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টেও হানা দিতে পারে।''


ফাঁদ পেতে রেখেছে প্রতারকরা। এই পরিস্থিতিতে সাইবার বিশেষজ্ঞদের একটাই সতর্কবাণী...সাবধানতার মার নেই।