কলকাতা: নিম্ন আদালতে স্থায়ী কর্মীর পরিবর্তে চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগের (contractual Worker recruitment) অভিযোগ নিয়ে একটি মামলায় রাজ্য সরকারকে রীতিমতো ভর্ৎসনা করলেন কলকাতা হাইকোর্টের (Kolkata High court) প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম।
সম্প্রতি একটি মামলার প্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত নিম্ন আদালতগুলিতে অস্থায়ী ইংরেজি স্টেনোগ্রাফার ও পিওন সহ অন্যান্য কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন উত্তর ২৪ পরগনার জেলা বিচারক ৷ তিনি এই বিষয়ে সিঙ্গল বেঞ্চের দেওয়া নির্দেশ খারিজের আবেদন করেন ৷ কিন্তু,মঙ্গলবার উভয়পক্ষের আইনজীবীর সওয়াল-জবাবের পর সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে হস্তক্ষেপ করল না কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ ৷ বরং মামলাটি ফের ফেরত পাঠালেন সিঙ্গল বেঞ্চে ৷
মঙ্গলবার এই বিষয়ে উভয়পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য শোনার পর কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন। এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, "সিভিক ভলান্টিয়ার থেকে শুরু করে পুরসভা।সর্বত্র চুক্তিভিত্তিক অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা হচ্ছে। গোটা দেশে এমনটা কোথাও হয় না। এখানে প্রশাসন সব সীমানা পেরিয়ে যাচ্ছে। রাজ্য এভাবে নিয়োগ বন্ধ করে রাখতে পারে না। চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ কখনও নিয়ম হতে পারে না। চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ হল ব্যতিক্রম।"
রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন দফতরের চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম বলেন, "গোটা কর্মশক্তির বেশিরভাগটাই চুক্তিভিত্তিক। এভাবে কাজ চালাতে অত্যন্ত অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন বিচারকরা।" তিনি প্রশ্ন করেন, সবাই চুক্তিভিত্তিক হলে ঠিক বা ভুল কাজের দায় কে নেবে? ২৫ বছর ধরে কাজ করছেন, অবসরের সময়কালীন বেতন ২৬ থেকে ৩২ হাজার টাকা? সকাল থেকে মাঝরাত পর্যন্ত কাজ, বেতন ১৪ হাজার টাকা? কীভাবে সম্ভব?"
মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলাকারীদের তরফে জানানো হয়, রাজ্যের সব জেলার আদালতগুলিতে মোট ৮ হাজার ৪৩৯ জন কর্মী থাকার কথা ৷ তার মধ্যে ৬ হাজার ৩২৩টি পদে লোক রয়েছে ৷ কিন্তু, ২ হাজার ১১৬টি পদ ফাঁকা রয়েছে ৷ এই খালি থাকা পোস্টের মধ্যে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনাতে থাকা আদালতগুলির জন্য ২০২৩ সালে ৫০০টিরও বেশি শূন্য পদে চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। তারপরই এই বিষয়ে মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।