নয়াদিল্লি: জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে প্রকৃতি ধ্বংসাত্মক রূপ ধারণ করছে বলে সতর্কবার্তা মিলছে বারংবার। হিমবাহ গলে যাওয়া থেকে পাহাড়-পর্বত খাটো হয়ে যাওয়া, বিপদের আভাস মিলছে লাগাতার। সেই আবহেই এবার পৃথিবীর বৃহত্তম নদী আমাজনকে নিয়ে ঘোর বিপদ ঘনিয়ে এল। খরা এবং অনাবৃষ্টিতে শুকিয়ে কাঠ হওয়ার জোগাড় নদী। নদীর জলস্তর নাম নেমেই চলেছে লাগাতার। (Amazon River)
আমাজনকে নিয়ে ইতিমধ্যেই বিপদবার্তা শুনিয়েছে ব্রাজিলিয়ান জিওলজিক্যাল সার্ভিস (SGB). তারা জানিয়েছে, আমাজন অববাহিকার অন্তর্গত সব নদীর অবস্থাই সঙ্কটজনক। ঐতিহাসিক ভাবে জলস্তর নেমে গিয়েছে। সাধারণ মানুষের পক্ষেও নদীতে নামা, নদীপথ ব্যবহার দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ব্রাজিলিয়ান জিওলজিক্যাল সার্ভিস জানিয়েছে, একাধিক জায়গায় উদ্বেগজনক ভাবে নেমে গিয়েছে আমাজন নদীর জলস্তর। গত বছর রিও নিগ্রোর গভীরতা যেখানে ২৪ মিটার ছিল, বর্তমানে তা ২১ মিটারে এসে ঠেকেছে। এমন পরিস্থিতিতে শিল্প সংস্থাগুলির উৎপাদনেও প্রভাব পড়ছে। পণ্য সরবরাহে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে তারা। ফলে নদীর পলি তোলার আবেদন জানাচ্ছে তারা। গতবছরও একই পরিস্থিতি তৈরি হয়। (Amazon Drying Up)
ব্রাজিল সরকার জানিয়েছে, মদিরা নদীর একাধিক স্থানে ইতিমধ্যেই পলি তোলা হয়েছে। আগামীতে আরও বেশ কিছু জায়গায় পলি তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু তাতেও উদ্বেগ কাটছে না। কারণ খরার মরশুম দীর্ঘায়িত হওয়ার কারণেই নদীগুলির এমন অবস্থা বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। নদীপথে আগামী দিনে ব্রাজিলের দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্বের বন্দরে পৌঁছনই যাবে না বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
প্রশাসন সূত্রে খবর, চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে মদিরা নদীর গভীরতা দু'মিটারেরও কম হয়ে রয়েছে। সাধারণত ৫.৩ মিটার গভীরতা বজায় থাকে এই নদীতে, যা কি না উত্তর ব্রাজিলের অন্যতম মূল নদীপথ। ফলে আমাজন অববাহিকায় বসবাসকারী স্থানীয় মানুষজন আতান্তরে পড়ে গিয়েছেন। খাদ্যদ্রব্য সংগ্রহ থেকে কাজের প্রয়োজনে অন্যত্র যাওয়া-আসা, সব কিছুই বন্ধ হওয়ার জোগাড়। ফসল জল পাচ্ছে না। মাছচাষও করা যাচ্ছে না আর। ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে সাধারণ বাসিন্দাদের।
এমন পরিস্থিতির জন্য বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনকেই দায়ী করা হচ্ছে। লা নিনার প্রভাবেই অনাবৃষ্টি দেখা দিয়েছে বলে মত পরিবেশবিদদের। প্রশান্ত মহাসাগরের জল উষ্ণ হয়ে গিয়েছে, তার ফলেই আমাজনের এমন অবস্থা বলে দাবি তাঁদের। পাশাপাশি, অনাবৃষ্টির প্রকোপও রয়েছে। এখনই সম্মিলিত প্রচেষ্টা শুরু না হলে, আগামী দিনে ঘোর বিপদ অপেক্ষা করছে বলে মত পরিবেশবিদদের।
আরও পড়ুন: Rings of Saturn: আগামী বছর অদৃশ্য হবে শনির বলয়, কেন, কী বৃত্তান্ত, জানালেন বিজ্ঞানীরা