পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা: ডাকাতির (Beleghata Dacoity) তদন্তে নেমে সরষের মধ্যেই ভূত খুঁজে পেল পুলিশ (Kolkata News)। মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে ডাকাতদল টাকা-সোনা চুরি করে নিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন বেলেঘাটা নিবাসী এক মহিলা। তাঁকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ করেন। তদন্তে নেমে ডাকাতি কাণ্ডের সর্দার হিসেবে তাঁরই স্বামীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। স্ত্রীর কাছে প্রচুর টাকা রয়েছে ভেবে তিনিই ভাড়াটে গুন্ডা লাগিয়ে ডাকাতির ছক ফাঁদেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।


মাস দেড়েক আগের ঘটনা। গত ২১ জানুয়ারি থানা-পুলিশের দ্বারস্থ হন পেশায় আইনজীবী এক মহিলা। জানান, ঘটনার দিন বাড়িতেই ছিলেন তিনি। সেই সময় একদল দুষ্কৃতী বাড়িতে ঢুকে পড়ে। মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে তাঁকে টাকা-সোনা সব বার করে দিতে বলেন। আতঙ্কে সেঁধিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কোনও প্রতিবাদই করেননি। সেই অবস্থায় লক্ষাধিক টাকা এবং সোনার গহনা লুঠ করে ডাকাতের দল। চম্পট দেওয়ার আগে তাকে বেধড়ক মারধরও করা হয় বলে জানান। নিগ্রহের শিকার ওই মহিলা সেইসময় পুলিশকে জানান যে, ডাকাতের দল এক নির্মম ভাবে মারধর করে তাকে, যে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় তাঁকে।


সেই ঘটনায় লুঠ, খুনের চেষ্টার মামলা দায়ের করে পুলিশ। এর পর বিশদে তদন্ত শুরু হয়। বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। কিন্তু তদন্তে নেমে গোড়া থেকেই বেশ কিছু জায়গায় হোঁচট খেতে হচ্ছিল তাদের। ধৃতদের বয়ান ঘিরেও ধন্দ তৈরি হচ্ছিল। সেই সংক্রান্তসব তথ্য-প্রমাণ একত্রিত করে সন্দেহ গিয়ে পড়ে মহিলার স্বামীর উপর।  শেষমেশ ওই মহিলার স্বামীকে সম্প্রতি গ্রেফতার করে পুলিশ। মহিলার স্বামীও পেশায় আইনজীবী।কিন্তু পুলিশের দাবি, তিনি ডাকাতির মূল চক্রী।  



আরও পড়ুন: Anis Murder Case: আনিসের রহস্যমৃত্যু মামলায় হাইকোর্টে প্রশ্নের মুখে সিট


পুলিশ জানিয়েছে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বেশ কিছু দিন ধরেই বনিবনা হচ্ছিল না। প্রায়শই অশান্তি লেগে থাকত সংসারে। অভিযুক্তের ধারণার ছিল, তাঁর স্ত্রীর প্রচুর টাকা রয়েছে, যা কি না কোটির অঙ্কও চাড়িয়ে যায়। সেই মতো ওই টাকা হাতানোর পরিকল্পনা শুরু করেন তিনি। নিয়োগ করেন ভাড়াটে গুন্ডা।


তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে যে, স্ত্রীকে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করতে চেয়েছিলেন অভিযুক্ত। সেই মতো আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে সব লুঠ করে নিয়ে যাওয়ার ফন্দি বার করেন। তাঁর সেই পরিকল্পনা অনুযায়ীই বাড়িতে হানা দেয় ভুয়ো ডাকাতের দল।


অভিযুক্তের বিরুদ্ধেও ডাকাতি এবং খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে (Husband Accused of Dacoity and Assault on Wife)। শনিবার শিয়ালদহ আদালতে তোলা হবে তাঁকে। সেখানে তাঁকে হেফাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হবে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও বিশদ তথ্য জানতে চায় পুলিশ।