কলকাতা : ফের রাজ্যে ডেঙ্গি (Dengue) আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু। জগদ্দলের (Jagaddal) বাসিন্দা বছর ৫৫-এর দীনবন্ধু ঘোষ সপ্তাহখানেক ধরে বেলেঘাটা আইডি ভর্তি ছিলেন। সম্প্রতি শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় সিসিইউতে স্থানন্তরিত করা হয়। বুধবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। ডেথ সার্টিফিকেট ডেঙ্গি সংক্রমণের উল্লেখ রয়েছে।


ডেঙ্গিতে প্রসূতির মৃত্যু-


দিন দু'য়েক আগেই সন্তান প্রসবের দেড় দিনের মধ্যে মৃত্যু হয় এক প্রসূতির। মারাত্মক রক্তক্ষরণ, যমে মানুষে টানাটানি ! শেষমেশ, এসএসকএম হাসপাতালে মর্মান্তিক মৃত্যু হয় ভবানীপুরে বধূর।


ভবানীপুরের বাসিন্দা গুড়িয়া রজক। বয়স মাত্র ২২। একবছরও হয়নি বিয়ে হয়েছিল। ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। দিন গুণছিলেন, কবে, ভূমিষ্ট হবে তাঁর আত্মজ। সন্তানকে দুই হাতের মধ্যে জড়িয়ে নেবেন। এরইমধ্যে, শনিবার, আচমকাই কাঁপুনি গিয়ে জ্বর আসে গুড়িয়ার। পরিবার সূত্রে খবর, ওইদিন সকালেই তাঁর প্লেটলেট টেস্ট করা হয়। রাতে রিপোর্ট আসে। প্লেটলেট ছিল ১ লক্ষ ৩০ হাজার। ডেঙ্গি পজিটিভ। রবিবারদিনই অন্তঃসত্ত্বাকে SSKM মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন আত্মীয়রা। জরুরি ভিত্তিতে ডেলিভারি করানোর সিদ্ধান্ত নেন চিকিত্‍সকরা। 


সেই মতো, রাত ১০টায় হয় অস্ত্রোপচার। পুত্রসন্তানের জন্ম দেন গুড়িয়া। কিন্তু এরপর শুরু হয় মারাত্মক রক্তক্ষরণ। যমে মানুষে টানাটানি। 


SSKM সূত্রে খবর, তরুণীর অস্ত্রোপচারের জায়গায় দু’বার সেলাই করতে হয়। সোমবার ৮ ইউনিট প্লেটলেট ও ৪ ইউনিট রক্ত দেওয়া হয়। কিন্তু মঙ্গলবার সব চেষ্টা শেষ। মৃত্যুর কাছে হার মানতে হয় তরুণীকে। 


বছরের শেষেও ডেঙ্গির দাপট কমছে না-


কিন্তু, কেন এই ডেঙ্গির দাপট ? আবহাওয়ার (Weather) খামখেয়ালিপনা, সঙ্গে অপরিকল্পিত নগরায়ন, এই কারণে বছরের শেষেও ডেঙ্গির দাপট কমছে না। এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। সেই সঙ্গে তাঁদের পরামর্শ, জ্বর হলেই চিকিৎসকের কাছে যান।


ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, অক্টোবরের শেষ। বর্ষার বিদায় এবং শীত আসার সময়। কিন্তু, কমার বদলে বেড়েই চলেছে ডেঙ্গির প্রকোপ ! যা দেখে উদ্বেগ বাড়ছে চিকিৎসকদের। ডেঙ্গির এই বাড়বাড়ন্তের জন্য আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার পাশাপাশি, অপরিকল্পিত নগরায়নকেও দায়ী করছেন চিকিৎসকদের একাংশ।


দক্ষিণ থেকে উত্তরবঙ্গ, রাজ্য জুড়েই অবনতি হচ্ছে ডেঙ্গি পরিস্থিতির। এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞদের (Experts) পরামর্শ, জ্বর (Fever), গায়ে র‍্যাশ, মাথা ব্যথা (Head Ache), চোখের চারপাশে ব্যথা, গাঁটে ব্যথা, বমি বমি ভাব, খিদে না পাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিলেই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। নাইসেড সূত্রে খবর (According to NICED), এবার ডেং থ্রি প্রজাতির প্রকোপ বেশি। সেই কারণেই উপসর্গ ও শারীরিক অবনতির গতিপ্রকৃতি নিশ্চিতভাবে বুঝে উঠতে সমস্যা হচ্ছে চিকিৎসকদের।


আরও পড়ুন ; ডেঙ্গি ধরা পড়ায় তড়িঘড়ি প্রসব, ৪৮ ঘণ্টা পরেই মৃত্যু তরুণীর