কলকাতা: চেতলায় মদের আসরে বচলা ও শাবল ঢুকিয়ে খুনের অভিযোগে এবার গ্রেফতার করা হয়েছে ২ জনকে। খোদ মেয়র ফিরহাদ হাকিমের ওয়ার্ডের ১৭ নম্বর বাসস্ট্যান্ডে খুন ১ ব্যক্তিকে খুন করা হয়েছিল। নিহত অশোক পাসোয়ান পেশায় সার্ভিস সেন্টারের মেকানিক ছিলেন। এদিকে, এই ঘটনায় মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলছেন, ''নিজেদের মধ্য়ে ঝামেলা হয়েছিল হয়ত। আমি পুলিশকে বলেছি আরও রাউন্ড বাড়াতে এখানে। আইন আইনের পথেই চলবে। এটা ঠিক যে চেতলার সাইডিং এরিয়া, যেখানে অর্ধেক জায়গা রেলের। সেখানে রেল পুলিশের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। সেখানেই এই সব ঘটনা ঘটে থাকে। আমি তবু পুলিশকে বলেছি ভিজিলেন্স বাড়াতে। মুখ্যমন্ত্রীও আমাকে বলেছেন যে যথাযত ব্যবস্থা নিতে।''

Continues below advertisement

খাস কলকাতার বুকে। খোদ মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বাড়ির অদূরে নৃশংস হত্যাকাণ্ড! শনিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ। চেতলায় ১৭ নম্বর বাসস্ট্যান্ডের কাছে মদের আসরে ছিলেন ৪২ বছরের অশোক পাসোয়ান। সেখানে বচসার জেরে তাঁকে গলায় শাবল ঢুকিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে। চেতলার প্রত্যক্ষদর্শী এক বাসিন্দা বলছেন, ''১৭ নম্বর বাসস্ট্যান্ডে আইনজীবীর অফিসের সামনে অশোক পাসোয়ানের গলায় শাবল ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এখানেই মদের আসর বসেছিল, অশোকের সঙ্গে ছিল তার সঙ্গীরা, সেখানে গন্ডোগোল হয় অশোকের সঙ্গে বাকিদের, এই ফুটপাথ ধরে রক্তাক্ত অবস্থায় ১০০ মিটার ছুটে যায়। এই মন্দিরের সামনেই রক্তাক্ত অবস্থায় ছুটতে ছুটতে অশোক এসে বসে।''নিহতের পরিবারের দাবি, রক্তাক্ত অবস্থায় এই রাস্তা ধরে ছুটতে ছুটতে এসে বাস্তায় বসে পড়ে সেখানেই জ্ঞান হারান অশোক পাসোয়ান। ভয়াবহ ওই দৃশ্য তাঁর পরিবারকে খবর দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষ রক্ষা হয়নি। অশোক পাসোয়ানের আত্মীয় বলছেন, ''লোক বলছে তোমার ভাইকে মেরেছে রক্ত বেরোচ্ছে, এসে দেখছি রক্তে ভেসে যাচ্ছে।প্রথমে বুঝতে পারছি না কোথা থেকে রক্ত বোরেচ্ছে, ডাক্তার যখন ওয়াশ করেছে দেখছি মামাকে মেরে ফাটিয়ে দিয়েছে।'' কলকাতা পুুরসভার যে ৮২ নম্বর ওয়ার্ডে ভয়ঙ্কর ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানকারই বাসিন্দা রাজ্যের মন্ত্রী ও মেয়র ফিরহাদ হাকিম। অথচ অভিযোগ, সেখানে একাধিক জায়গায় কোনও সিসি ক্যামেরা নেই। চেতলার এক বাসিন্দা বলছেন, ''এই জায়গা পুরো মদের ঠেক, রোজ হয় রাত ১২টার পরে, প্রতিবাদ করলে মারবে, পুলিশ আছে কলকাতায়? মদ খোর, গাঁজা খোর, পাতা খোরদের এখানে পুরো আড্ডা, বাইরে থেকে কিনে নিয়ে এখানে আসছে।''খাস মেয়রের এলাকায় এরকম ঘটনায়, স্বাভাবিকভাবেই আক্রমণ শানাতে ছাড়েনি বিজেপি। কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলছেন, ''অস্বাভাবিক কিছু নয়, মেয়র এদের লালিত, পালিত করে, এরা ভোট চুরি করে বিজেপির লোকেদর মারধর করে, মদের আসর বসেছে মেয়রের বাড়ির কাছে মোয়র জানবে না। ফিরহাদ হাকিম সাহেব যদি পুলিশকে বলেন, পুলিশ অ্যাকশন নেবে না, এত বড় ক্ষমতা পুলিশের আছে, পুরোটাই ফিরহাদ হামিক সাহেব জানতেন।'' এদিকে খুনের ঘটনার পরই চেতলা থানায় ওসিকে বদল করা হল। এতদিন ওসির দায়িত্বে ছিলেন সুখেন্দু মুখোপাধ্যায়। তাঁকে সরিয়ে নতুন ওসি করা হল অমিতাভ সরখেলকে। আলিপুর থানার অতিরিক্ত ওসি ছিলেন তিনি। 

Continues below advertisement