অরিত্রিক ভট্টাচার্য, আশাবুল হোসেন ও উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: অসুখের নাম 'অন্ধকার'! শনিবার থেকে Blue লাইনের সব মেট্রো স্টেশনে বন্ধ ডিসপ্লে। দেখা যাচ্ছে না ট্রেনের সময় সারণি। যাত্রীদের অভিযোগ, নিত্যদিনের সমস্যা মেটাতে না পেরে ডিসপ্লে বোর্ডই অকেজো করে দেওয়া হয়েছে। যাতে বোঝাই না যায় ট্রেনের সময়। প্রতিক্রিয়া মেলেনি মেট্রো কর্তৃপক্ষের। অন্যদিকে, সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনেই মেট্রো বিভ্রাট নোয়াপাড়া ও গিরিশপার্ক স্টেশনের মাঝে। পয়েন্টের গোলমালে বিপত্তি, জানাল মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
দেরিতে চলাচল, বাতানুকুল ব্যবস্থা বিকল, দরজা খোলা বা বন্ধ না হওয়া। লাইনে বিভ্রাট থেকে রেকের নীচে ধোঁয়া, সমস্যা অনেক। যে কারণে, পাতালপথে বার বার বিঘ্নিত হয় পরিষেবা! দুর্ভোগ চরমে ওঠে যাত্রীদের। এবার বন্ধ স্টেশনের ডিসপ্লে। মেট্রো স্টেশনে ঢোকার মুখে সব জায়গায় থাকে না 'সার্ভিস অ্যাভেলেবল' বোর্ড। ডিসপ্লে বোর্ড়ে ট্রেনের সময় সারণি দেখেই বোঝা যেত, মেট্রোর গতিবিধি। স্টেশনের ডিসপ্লে বোর্ডে যেখানে দেখা যেত পরবর্তী ট্রেনের টাইম, এখন সেখানে শুধুই অন্ধকার। Blue লাইন অর্থাৎ নিউ গড়িয়া থেকে দক্ষিণেশ্বর- সমস্ত স্টেশনের ডিসপ্লে বোর্ড থেকে উধাও হয়ে গেছে ট্রেনের সময়সূচি। আর এই ছবি দেখেই যাত্রীরা প্রশ্ন তুলছেন, নিত্য়দিনের অব্য়বস্থা লুকোতেই কি মেট্রো কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃতভাবে ডিসপ্লে অফ করেছে? যাতে যাত্রীরা মেট্রোর দেরি ধরতে না পারেন, সে জন্য়ই কি এই ব্য়বস্থা? নতুন ৩টি রুটে মেট্রো চালু হওয়া এবং নিউ গড়িয়া স্টেশনে পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই মেট্রো-যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। বিশেষ করে ব্লু লাইনে।
কখনও মেট্রো পেতে দেরি..... আবার কখনও নির্দিষ্ট গন্তব্য পর্যন্ত না যাওয়ার অভিযোগ....। যাত্রীদের প্রশ্ন, নিত্যদিনের এই অব্য়বস্থা মেটাতে না পেরে ডিসপ্লে বোর্ড অকেজো করে দেওয়া হয়েছে। ইস্ট-ওয়েস্ট (গ্রিন লাইন) এবং নোয়াপাড়া-বিমানবন্দর (ইয়েলো লাইন) মেট্রোর পরিষেবা নিয়ে যাত্রীদের ততটা অভিযোগ না থাকলেও ব্লু লাইন নিয়ে বিস্তর অভিযোগ। যাত্রীদের অভিযোগ, লোকাল ট্রেনের মতো, সময় মেনে না-চলাই এখন কার্যত মেট্রোর নিয়ম। সোমবার সকালেও, ব্লু লাইনে নোয়াপাড়া থেকে গিরিশপার্কের মধ্যে বিঘ্নিত হয় মেট্রো পরিষেবা। সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনেই মেট্রো বিভ্রাটে নাজেহাল হতে হয় যাত্রীদের। মেট্রো সূত্রে খবর, পয়েন্টের গোলমালের জেরে সমস্যা হয়। সেই কারণেই পরিষেবা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বেলা ১২.২০-র পর স্বাভাবিক হয় পরিষেবা। কিন্তু, কেন দিন দিন অসুখ বাড়ছে মেট্রোর? কোন ওষুধে সারবে এই সব রোগ? এনিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা হলেও কোনও উত্তর দেননি মেট্রো কর্তারা। বিজেপি সাংসদ ও কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার, যে ভোগান্তি গুলো হচ্ছে, আমরা জনগণকে বলব, আমার মেইল আইডি আছে, আপনারা প্লিজ একটু দয়া করে আমাদের জানাবেন আমরা চেষ্টা করব সেগুলোকে মাননীয় রেলমন্ত্রীর সাথে কথা বলে সমাধান করার জন্য। আমি মেট্রোর GM-এর সঙ্গে কথা বলব, আমার আজকে সকালেই মাননীয় মন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে ফোনে। শহরের মেট্রোপথের কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। এক নিমেষে পৌঁছে যাওয়া যায় শহরের এপ্রান্ত থেকে ও প্রান্ত। কিন্তু অসময়ে চলা আর সময় লুকনোর রোগ সারানো না গেলে সেই মুকুট বেশিদিন অটুট থাকবে তো? ক্রমশ জোরাল হচ্ছে সেই প্রশ্ন।