অরিত্রিক ভট্টাচার্য, কলকাতা: নীল, সবুজ, কমলা, হলুদ লাইনে জুড়ে গেছে শহরের নানা প্রান্ত। ১ দিনেই ১৪ কিলোমিটার নতুন মেট্রো-পথের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু প্রশ্ন হল এতবড় নেটওয়ার্ক চালানোর জন্য পর্যাপ্ত কর্মী আছে তো? মেট্রো রেলের কর্মচারী ইউনিয়নগুলি দাবি করেছে, একাধিক বিভাগে পর্যাপ্ত আধিকারিক ও কর্মীর অভাব রয়েছে। ইতিমধ্য়েই যা জানানো হয়েছে রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যানকে।

এক দিনে মেট্রোয় জুড়েছে ১৪ কিলোমিটার রাস্তা। সোমবার থেকেই নতুন পথে ছুটবে রেক। কৃতিত্ব নিয়ে শুরু হয়ে গেছে প্রবল দড়ি টানাটানি। কিন্তু, প্রশ্ন হল, এতবড় নেটওয়ার্ক চালানোর জন্য পর্যাপ্ত কর্মী আছে তো? পরিসংখ্য়ান পেশ করে, মেট্রো রেলের কর্মচারী ইউনিয়নগুলি দাবি করেছে, শুধু যে মোটরম্য়ান বা রক্ষণাবেক্ষণের কর্মীরই অভাব রয়েছে তা নয়, নেই পর্যাপ্ত সাফাইকর্মী অবধি। ইউনিয়ন সূত্রে খবর, গত কয়েক বছরে, কলকাতা মেট্রোয় নতুন কোনও নিয়োগ হয়নি। এরমধ্য়ে অনেকেই অবসর নিয়েছেন। অনেক কর্মীকে ট্রান্সফার করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কীভাবে, ব্লু, ইয়েলো, অরেঞ্জ, পারপেল, গ্রিন... এতগুলো লাইনে মেট্রো পরিষেবা দেওয়া যাবে, তা নিয়েই চিন্তায় কর্মীদের একাংশ। এতদিন মূলত, দক্ষিণেশ্বর থেকে নিউ গড়িয়া পর্যন্ত মেট্রো চলত। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে, সেক্টর ফাইভ থেকে সল্টলেক স্টেডিয়াম অবধি, গ্রিন লাইনের কিছু অংশে মেট্রো চলাচল শুরু হয়। এবার মেট্রোর রুট আরও সম্প্রসারিত হল। কিন্তু, মেট্রোর কর্মচারী ইউনিয়ন সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে কলকাতা মেট্রোর অপারেটিং বিভাগে ৬০৮টি পদ ফাঁকা। যেখানে ৫০৭ জন মোটরম্য়ান প্রয়োজন, সেখানে আছে মাত্র ২৪০ জন। ইউনিয়ন সূত্রে খবর, শুধু ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোতেই প্রয়োজন ৬০ জন মোটরম্য়ান। সেখানে রয়েছে ৪৫ জন। সিনিয়র মোটরম্যানদেরই কারশেড থেকে গাড়ি স্টেশনে আনতে হয়। কারণ, পদ থাকলেও, কারশেড থেকে রেক বের করে আনার জন্য় নেই শান্টার। নতুন ট্র্য়াকম্য়ানও নিয়োগ করা হয়নি। এমন অবস্থা, যে, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর অত্য়ন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন এসপ্ল্য়ানেডে প্রতি শিফটে রয়েছেন মাত্র ৪ জন। যেখানে কিনা অন্তত ১০ জনের প্রয়োজন বলে দাবি। এখানেই শেষ নয়। ইউনিয়ন সূত্রে খবর, ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পে এতদিন সাফাইয়ের কাজ দেখত এক বেসরকারি সংস্থা। তাদের সঙ্গে চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়ার পর, চুক্তি রিনিউ করা হয়নি। ফলে ব্লু লাইন অর্থাৎ দক্ষিণেশ্বর-কবি সুভাষ রুট থেকে সাফাই কর্মী এনে ভারসাম্য় রক্ষা করতে হচ্ছে। মেট্রোর কর্মচারী ইউনিয়নের দাবি, ইতিমধ্য়ে রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যানকে সমস্য়ার কথা জানানো হয়েছে। মেট্রো রেল সূত্রে খবর, ইতিমধ্য়েই ব্লু লাইনের ৫০ জনের বেশি কর্মীকে অন্য়ান্য় লাইনে ট্রান্সফার করা হয়েছে। যদিও এই সমস্য়া নিয়ে সেভাবে কিছুই বলতে চাননি মেট্রো রেলের জেনারেল ম্য়ানেজার।