সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা : রাজ্যে জাঁকিয়ে বসছে ‘পেটাই’-সংস্কৃতি। গণপিটুনির একের পর এক ঘটনা জেলা থেকে জেলায়।  এবার আড়িয়াদহে মা ও কলেজ পড়ুয়া ছেলেকে রাস্তায় ফেলে পেটানোর অভিযোগ উঠল। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেল সেই নির্মমতার ছবি। চোপড়া, জলপাইগুড়ির মতো, এখানেই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী ও তার দলবলের বিরুদ্ধেই উঠল এই ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটানোর অভিযোগ । CCTV ক্যামেরায় ধরা পড়েছে রবিবার রাতের ভয়াবহ তাণ্ডবের ছবি।

  

ঠিক কী ঘটেছিল
অভিযোগ, কলেজ পডুয়া তরুণের সঙ্গে একজনের বচসা হয়। এরপরই দলবল নিয়ে চড়াও হয় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী জয়ন্ত সিং। বাড়ির সামনে লাঠি, ইট দিয়ে মারা হয় তরুণকে। ছেলেকে বাঁচাতে ছুটে যান মা। তখন তাঁকেও ছেড়ে দেয়নি দুষ্কৃতীরা।  মারধর করা হয় মহিলাকেও । এরপর ভয়ঙ্কর ভাবে জখম হয়ে কাতরাতে থাকেন  মা ও ছেলে। দুজনেই এখন নার্সিংহোমে ভর্তি। ঘটনায় ইতিমধ্যেই ৬ জনকে গ্রেফতার করা করেছে বেলঘরিয়া থানার পুলিশ।


স্থানীয়দের দাবি, এর আগেও ওই দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তৃণমূল নেতা ও কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা।  

কোথাও চোর সন্দেহে পিটিয়ে খুন, কোথাও ছেলেধরা সন্দেহে বেধড়ক মার।  দিকে দিকে অত্যাচারের ছবি দেখে শিউরে উঠছে বাংলা। এরই মধ্য়ে, এবার গণপিটুনির ঘটনায় কঠোরতম শাস্তির আইন আনল কেন্দ্র। বউবাজার,  সল্টলেক,  পাণ্ডুয়া, জামবনি,  তারকেশ্বর, শুধুমাত্র সন্দেহের বশে একের পর এক জায়গায় পিটিয়ে খুন হয়েই চলেছে। কোথাও মোবাইল ফোন চুরির সন্দেহ কোথাও টাকা চুরির অভিযোগে। এরই মধ্যে আবার একাধিক ঘটনা ঘটছে রাজ্যে, যেখানে সালিশি সভা ডেকে, সবক শেখানোর অজুহাতে, টার্গেট করা হচ্ছে মহিলাদের। কখনও চোপড়া, কখনও জলপাইগুড়ি। এরই মধ্যে অমিত শাহ দাবি করেছেন,' বছরের পর বছর ধরে দেশে গণপিটুনি নিয়ে আইনে কোনও সংস্থান ছিল না। শাস্তি চালুর দাবি উঠত। প্রথমবার গণপিটুনিকে পরিভাষিত করা হয়েছে। জাতি, সম্প্রদায়, লিঙ্গ, জন্মস্থান, ভাষা এবং অন্যান্য কারণে যে গণপিটুনির ঘটনা ঘটছে। এতে ৭ বছরের কারাদণ্ড থেকে শুরু করে মৃত্যুদণ্ড ও আজীবন কারাবাস সাজা যুক্ত করা হয়েছে।'  


এখন দেখার এতগুলো ঘটনার সাজা আদৌ কেউ পায় কি না। 


আরও পড়ুন :


সালিশি সভায় ডেকে গৃহবধূকে বেদম মার এবার জলপাইগুড়িতে, 'কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী'