অনির্বাণ বিশ্বাস, আবির দত্ত ও অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা:  কলকাতা পুরসভার (Kolkata Municiple Election) ভোটে একাধিক ওয়ার্ডে ছাপ ফেললেন নির্দল প্রার্থীরা। ৪৩, ১৩৫ এবং ১৪১ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী ৩ নির্দল প্রার্থী। রেজাল্ট আউটের পরেই ৩ জয়ী নির্দল প্রার্থী তৃণমূলে যোগদানের ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। দলে যোগ দিতে চেয়ে আবেদন জানালে, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত। বার্তা শাসকদলের।


কলকাতা পুরসভার ভোটে তৃণমূলের ল্যান্ডস্লাইড ভিকট্রি। ছাপ ফেললেন নির্দল প্রার্থীরাও। ৩টি ওয়ার্ডে নিকটবর্তী তৃণমূল প্রার্থীকে হারিয়ে জয়ী হলেন ৩ কন্যা। ১৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে রুবিনা নাজ। ১৪১ নম্বর ওয়ার্ডে পূর্বাশা নস্কর এবং ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডে আয়েশা কানিজ জিতলেন নিকটবর্তী তৃণমূল প্রার্থীকে হারিয়ে এবং ফল ঘোষণা হতে না হতেই ৩ কন্যাই একসুরে জানালেন, তাঁরা যোগ দেবেন তৃণমূলে। 


১৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের জয়ী নির্দল প্রার্থী রুবিনা নাজ বলেন, খুব তাড়াতাড়ি যোগ দেব তৃণমূলে। ১৪১ নম্বর ওয়ার্ডের জয়ী নির্দল প্রার্থী পূর্বাশা নস্কর বলেন, তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন তিনিও। ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের জয়ী নির্দল প্রার্থী আয়েশা কানিজ বলেন, তিনিও তৃণমূলে যোগ দেবেন। 


১৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল জয়ী প্রার্থী শামসুজ্জামান আনসারির বউমা রুবিনা নাজ এবার ১৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের টিকিট প্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু ওই ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী করে আখতারি নিজামি শাহজাদাকে। নির্দল প্রার্থী হয়ে ৩৬০ ভোটে তৃণমূল প্রার্থীকে হারিয়ে দেন নির্দল প্রার্থী রুবিনা।


রুবিনা নাজ বলেন, খুব তাড়াতাড়ি যোগ দেব তৃণমূলে, বাবা যেদিন বলবে সেদিনই জয়েন করে যাব। ১৪১ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী পূর্বাশা নস্কর নিকটবর্তী তৃণমূল প্রার্থী শিবনাথ গায়েনকে ৫০৯ ভোটে হারিয়ে তিনি জয়ী হয়েছেন। রেজাল্ট আউটের কিছুক্ষণ পরই তিনিও তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী আয়েশা কানিজ ২ হাজার ১১১ ভোটে তৃণমূল প্রার্থী সগুফতা পরভিনকে হারিয়েছেন তিনি।      


কলকাতা পুরসভা ভোটে জয়ী ৩ নির্দল প্রার্থীকে দলে নেওয়ার ব্যাপারে কার্যত গ্রিন সিগন্যাল ৮২ নম্বর ওয়ার্ডের জয়ী তৃণমূল প্রার্থী ফিরহাদ হাকিম বলেন, "তারা যদি অ্যাপ্লাই করে, দল ঠিক করবে, তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে, রুবিনা এসেছিল, কথা হয়েছে, বলেছি অ্যাপ্লাই করতে, এখনও অবধি রুবিনাই এসেছিল।" 


পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই রাজ্যের ভোটে মেরুকরণের একটা প্রভাব পড়েছে। এবার কলকাতা পুরসভার ভোটে কোনও কোনও ওয়ার্ডে তার প্রভাব দেখা গেছে। বিশেষ করে অবাঙালি, উর্দুভাষী অধ্যুষিত এলাকায়। যদিও, এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে স্থানীয় ইস্যুও।


নির্বাচনী বিশেষজ্ঞ উদয়ন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "বিধানসভা, লোকসভা ভোটের তুলনায় এই ভোট আলাদা, এখানে কে কত পরিচিত, সহজে পাওয়া যায়, সেটা ম্যাটার করে, তাতে পার্টি বা রাজনীতি অবশ্যই আছে, যার ফলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় প্রথাগত বড় দলের না হলেও, সে ভোটে জেতে, ব্যক্তিগত ক্যারিশ্মা, এই পুরভোটে এগুলো ম্যাটার করে।" 


এদিকে, তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে  ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বোন তনিমা চট্টোপাধ্যায়। ৭২ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়। দু’জনেই হেরে গিয়েছেন।