কলকাতা: গতকাল হাইকোর্ট (High Court) ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকিকে (Nawsad Siddique) জামিনের নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু, আজ দুপুর ১২টা বেজে গেলেও জেল কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁর রিলিজ অর্ডার পৌঁছয়নি। ফলে এখনও জেলেই রয়েছেন আইএসএফ বিধায়ক। প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষের দাবি, আজ সূর্যাস্তের আগে রিলিজ অর্ডার তাদের কাছে না পৌঁছলে আজ মুক্তি পাবেন না নৌশাদ।
গ্রেফতারির ৪০ দিন পরে বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট (High Court) থেকে জামিন পেয়েছিলেন নৌশাদ সিদ্দিকি। জামিন মামলায় আগেই হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়েছিল রাজ্য।
গত সপ্তাহে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ প্রশ্ন করেছিলেন, 'একটা ঘটনায় ৮৮ জন গ্রেফতার? প্রতিরোধমূলক গ্রেফতারির ক্ষেত্রের এতদিন ধরে ৮৮ জন জেলে? এই ধরনের ঘটনায় ১-২ জন নেতাকে হেফাজতে নিলে ঠিক আছে, কিন্তু ৮৮ জন? এই ৮৮ জনের ভূমিকা প্রমাণ করার মতো ভিডিও রেকর্ডিং আছে তো?'
ওই একই দিনে আদালতে নৌশাদের আইনজীবীকে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, 'একজন নেতা বা বিধায়কের এই ধরনের ভূমিকা হয়? গণতন্ত্রের নামে এই ধরনের আচরণ করা যায়? প্রতিবাদের নামে এই ধরনের অনিয়মিত আচরণ করা যায় কি? এটা একজন নেতার কাছ থেকে আশা করা যায় না', মন্তব্য বিচারপতি বাগচীর। নৌশাদের আইনজীবী প্রশ্ন তোলেন, 'কী কারণে ফের পুলিশি হেফাজতের প্রয়োজন? যা জিজ্ঞাসাবাদ করার, তা তো হয়েছে। তদন্তের জন্য প্রয়োজনে ভিডিও কনফারেন্স করুন। উনি বিধায়ক। রাজবন্দি করে রাখা হোক।' সূত্রের খবর, তখন কাঠগড়া থেকে নৌশাদ সিদ্দিকি বলেন, 'কোনও বিশেষ সুবিধা চাই না। রাজবন্দি হওয়ার প্রয়োজন নেই।'
কোন ঘটনায় গ্রেফতার:
২১ জানুয়ারি ধর্মতলায় আইএসএফ-এর একটি কর্মসূচি ঘিরে ঝামেলা হয়। দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে ভাঙড়ে তৃণমূলের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন ISF নেতা-কর্মীরা, যার আঁচ এসে পড়ে কলকাতায়। ISF ও পুলিশের খণ্ডযুদ্ধে, অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে ধর্মতলা। গ্রেফতার করা হয় ভাঙড়ের বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকি-সহ আরও অনেক ISF নেতা কর্মীকে। তারপর থেকে নানা অভিযোগে বারবার নৌশাদকে হেফাজতে নিয়েছে নানা থানা। নৌশাদের মুক্তি চেয়ে পথে নেমেছিল ISF এবং বামদলগুলি। তারপরে হাইকোর্টে যান নৌশাদ সিদ্দিকি। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার জামিন মিলেছে। কিন্তু প্রক্রিয়া সংক্রান্ত কারণে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ছাড়া পাননি নৌশাদ।