কলকাতা: আলিপুর চিড়িয়াখানার পরপর দু’দিনে দুই বাঘিনীর মৃত্যু। মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা, গঠন করা হল তদন্ত কমিটি। আজই আলিপুর পশু হাসপাতালে দুই বাঘিনীর ময়নাতদন্ত হবে। ৩ জন পশু চিকিৎসককে নিয়ে হবে ময়নাতদন্ত। গোটা প্রক্রিয়ার ভিডিওগ্রাফি করা হবে।মৃত ২ বাঘিনীর মধ্যে একজনের নাম রূপা, অন্যজনের নাম পায়েল। রূপার বয়স হয়েছিল ২১, পায়েলের বয়স হয়েছিল ১৭। অরণ্য ভবন ও চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের দাবি, দুই বাঘিনীই বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিল।
আরও পড়ুন, গলগল করে বেরচ্ছে কালো ধোঁয়া! বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে আগুন
চোরাশিকার থেকে শুরু করে বার্ধক্য ও রোগ, বিভিন্ন কারণে গত কয়েক বছরে ভারতে বহু বাঘের মৃত্যু
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চোরাশিকার থেকে শুরু করে বার্ধক্য ও রোগ, বিভিন্ন কারণে গত কয়েক বছরে ভারতে ৭৫০-র বেশি বাঘের মৃত্যু হয়েছে ভারতে। তালিকার শীর্ষে মধ্যপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্র। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, মোট ৭৫০-র মধ্যে ৩৬৯টি মারা গিয়েছে প্রাকৃতিক কারণে। চোরাশিকারীদের খপ্পরে প্রাণ হারিয়েছে ১৬৮টি বাঘ। এছাড়া, ৪২টি মারা গিয়েছে দুর্ঘটনা ও সংঘর্ষের মতো অজ্ঞাত কারণে এবং আরও ৭০টি মৃত্যুর সঠিক কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বাঘের মৃত্যু কোথায় কোথায় ?
এর পাশাপাশি, জাতীয় ব্যঘ্র সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষের (এনটিসিএ) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ থেকে ২০১৯ -- এই সাত বছরে বিভিন্ন রাজ্যে ১০১টি বাঘ মারা গিয়েছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক বছরে মধ্যপ্রদেশে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বাঘের মৃত্যু হয়েছে। এই রাজ্যে মারা গিয়েছে ১৭৩টি ডোরা-কাটা। এর মধ্যে ৩৮টির মৃত্যু হয়েছে চোরাশিকারের জন্য। ৯৪টির মৃত্যুর কারণ প্রাকৃতিক, ১৯টির কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে, ৬টি মৃত্যু অস্বাভাবিক এবং ১৬টি হৃদরোগে।
এত বাঘের মৃত্যু নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন বন্যপ্রাণী সেবী সংগঠন
এদিকে, এত বাঘের মৃত্যু নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন বন্যপ্রাণী সেবী সংগঠন। তাদের দাবি, চোরাশিকারীদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত। তাদের মতে, এটা গুরুতর বিষয়। এত সংখ্যক বাঘ চোরাশিকারীদের হাতে প্রাণ হারিয়েছে। সংগঠনগুলির অভিযোগ, রাজ্য সরকার বেশি করে ব্যঘ্র-পর্যটনের ওপর জোর দিচ্ছে। যার জেরে ডোরা-কাটাদের নিজস্ব প্রাকৃতিক বনাঞ্চল বিপন্ন হয়ে পড়ছে। এখন সময় এসেছে বাঘেদের সংরক্ষণের ওপর জোর দেওয়ার।