সন্দীপ সরকার, কলকাতা : ২০২২ এর গোড়াতেই করোনার ( Corona Third Wave ) তৃতীয় ঢেউ নড়িয়ে দিয়েছিল সারা দেশকে। ওমিক্রনের ( Omicron ) দাপটে কেঁপে গিয়েছিল আসমুদ্র হিমাচল। আর তার আগে ২০২১ এর ডেল্টার ধাক্কা, মৃত্যু মিছিল, ধাপার মাঠের না-নেভা চুল্লি, সারি সারি মৃতদেহের ছবি ... এইসব দুঃসহ স্মৃতি কোনওদিনই ফিকে হওয়ার নয়। সারা দেশে করোনার ভ্যাকসিনের সময়মতো প্রয়োগ ও প্রচারে, করোনার প্রকোপ আস্তে আস্তে কমে আসে। তবে করোনা ভাইরাস তো চিরতরে বিদায় নেয়নি। বরং বারবার জিনগত বিবর্তন ঘটিয়ে নতুন নতুন রূপে হানা দেয় করোনা। হয়তো তার অভিঘাত এতটা প্রকোপ নয়। কিন্তু হালফিলের একটি ঘটনা নড়িয়ে দিল শহরকে। করোনা আক্রান্তের ( Kolkata Coronavirus Death ) মৃত্যুর পর দেহ নিয়ে সেই টানাপোড়েনের ভয়াবহতার সাক্ষী রইল খাস কলকাতার একটি পরিবার।
রবিবার রাজ্যে ফের এক করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হয় বেলেঘাটা আই ডি হাসপাতালে। তাঁর বাড়ি খাস কলকাতাতেই। রিজেন্ট পার্কের নেহরু কলোনীর বাসিন্দা ছিলেন তিনি। কিছুদিন আগেই করোনা আক্রান্ত হয়ে তিনি ভর্তি হন হাসপাতালে। রবিবার বেলেঘাটা আই ডি হাসপাতালে মৃত্যু হয়
আশিস হালদার নামে ওই ব্যক্তির।
জ্বর এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে গত মঙ্গলবার ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। কোভিড রিপোর্ট পজেটিভ আসার পরে, বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। সেখানেই রবিবার রাত দশটা কুড়িতে মৃত্যু হয় তাঁর।
এরপরই করোনা ফিরিয়ে দেয় সেই তিক্ত স্মৃতি। মৃতব্যক্তির দেহ পেতে চেয়েছিল পরিবার। কিন্তু হাসপাতাল শুরু করে টালবাহানা। অভিযোগ , মৃত্যুর পর দেহ নিয়ে টানাপড়েন চলে দীর্ঘ সময়। পরিবার দেহ চাইলে হাসপাতাল জানিয়ে দেয়, ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত ছিলেন, তাই দেহ দেওয়া যাবে না। সোমবার দুপুর পর্যন্ত সেই টানাপড়েন চলতে থাকে। শেষমেশ ১৬ ঘণ্টা পর সোমবার দুপুরে কলকাতা পুরসভার গাড়িতে দেহ পাঠানো হয় ধাপায়। সেখানেই শেষকৃত্য হয় ওই আশিস হালদারের।
করোনার ঢেউ এখন শুধুই তিক্ত স্মৃতি। অতীতের পথে হাঁটলে সকলের স্মৃতিতেই চলে আসে একের পর এক ভয়াবহ ছবি - হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ড, মাস্ক-পিপিই ঢাকা চেহারা, অক্সিজেন নিয়ে হাহাকার, পরপর মৃত্যু, ধাপায় দেহের স্তূপ। সেই কঠিন সময় পার করেছে এ দেশ, কিন্তু রবিবার করোনা আক্রান্তের মৃত্যু, ফের এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মুখে দাঁড় করাল তাঁর পরিবারকে।
আরও বলুন :
মুকুল রায়ের বাড়িতে ইডি, বেশিরভাগ প্রশ্নেরই উত্তরেই মুকুল বললেন...