অ্যালকেমিস্ট  চিটফান্ড মামলায় মুকুল রায়কে (Mukul Roy) চলতি মাসেই তলব করেছিল ইডি (ED)। ইডির দিল্লির অফিসে তলব করা হয় মুকুল রায়কে। কিন্তু 'অসুস্থ' মুকুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে সোজা বঙ্গে আসে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার প্রতিনিধিরা। 


প্রায় ১ হাজার ৯০০ কোটির দুর্নীতি মামলায় আগেই অ্যালকেমিস্ট কর্তা কে ডি সিংহকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। সূত্রের খবর, সেই মামলার তদন্তে মেলা তথ্যের ভিত্তিতেই তলব করা হয় মুকুল রায়কে।  তবে  মুকুল- পুত্র শুভ্রাংশু রায় জানান, 'বাবার শরীর খারাপ, হাঁটাচলা করতে পারেন না, কিছু মনেও রাখতে পারেন না,  ইডি বাড়িতে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করলে করতে পারে, সহযোগিতা করব'। তারপরই সম্ভবত তাঁর কাঁচরাপাড়ার বাড়িতে এসে কথা বলার সিদ্ধান্ত নেয় সংস্থা । 


সোমবার অ্যাককেমিস্ট চিটফান্ড মামলায়  জিজ্ঞাসাবাদ করতে মুকুল রায়ের বাড়িতে পৌঁছয় টিম ইডি। কাঁচরাপাড়ার বাড়িতে প্রবীণ রাজনীতিকের বয়ান রেকর্ড করেন ইডির দিল্লির আধিকারিক। জানা গিয়েছে চিটফান্ড মামলায় প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে মুকুল রায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে তিনি বেশ কিছুদিন ধরেই অসুখে ভুগছেন। তাঁর পরিবারের দাবি, বেশির ভাগ কথাই স্মরণে থাকে না তাঁর। উপরন্তু কথা-বার্তায় অসংলগ্নতাও রয়েছে। তাই বেশিরভাগ প্রশ্নেরই উত্তর দিতে পারেনি মুকুল রায়। খবর ইডি সূত্রে। 


ইডি সূত্রে খবর, অ্যালকেমিস্ট চিটফান্ড দুর্নীতিতে এই কয়েক বছরে একাধিক ব্যক্তিকে জেরা করা হয়েছে। আর তাতে  বারবার মুকুল রায়ের নাম উঠে এসেছে।  এক সময় মুকুল রায় ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্ভরযোগ্য সৈনিক।  কেউ কেউ তাঁকে তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ডও বলত। সেই সময় তিনি  অ্যালকেমিস্টের থেকে বিভিন্ন বিষয়ে সুবিধে নিয়ে ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই সঙ্গে মুকুল রায়ের পরামর্শে অ্যালকেমিস্ট অনেককে টাকা দেয় বলে অভিযোগ। সেই তদন্তের স্বার্থেই মুকুলের বয়ান গুরুন্তপূর্ণ বলে মনে করছে ইডি। তবে  'অসুস্থ' মুকুলের বয়ান কতটা সাহায্য করবে তদন্তে, তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।  


 ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির হয়ে ময়দানে নামেন একদা তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা মুকুল। ধীরে ধীরে তিনি বিজেপি শিবিরেরও ভরসার পাত্র হয়ে ওঠেন।  কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্র থেকে লড়াই করে  বিধায়ক হয়েছিলেন মুকুল। তবে পরে তিনি জুন মাসে ফের তৃণমূলে যোগদান করেন । তারপর অবশ্য একাধিকবার তাঁর মুখে কখনও বিজেপির স্বপক্ষে , কখনও তৃণমূলের হয়ে কথা শোনা গিয়েছে। তখন থেকেই তাঁর অসুস্থতার কথা জানায় পরিবার।