রঞ্জিত সাউ, কলকাতা: নিউটাউন ইকোপার্কে এসে এদিনও শাসকদলের একাধিক হেভিওয়েটকে একাহাত নিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) । মদনের বোমা-হুমকি থেকে ফিরহাদ, কাউকেই নিশানা করতে ছাড়েননি বিজেপির এই বর্ষীয়ান নেতা।
'সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেন না। কি দাওয়াই দেবেন ?'
মদনের বোমা হুমকি ইস্যুতে এদিন তিনি বলেন, ওই ডায়লগ অনেক শুনেছি। সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেন না। কি দাওয়াই দেবেন? আমাদেরও হাত আছে। জিতে গিয়ে গায়ের জোর দেখাচ্ছিলেন। ১৩ তারিখ বুঝে গেছেন। পুলিশ গুন্ডা সব লাগিয়েছিল। বুঝে গেছে বাংলার মুড পাল্টে গেছে। মানুষ দায়িত্ব দিয়েছে। পালন করুন। নাহলে কান ধরে টেনে মানুষ নামিয়ে দেবে।'
দিলীপের তোপের মুখে মদন
প্রসঙ্গত, মদন মিত্রর মুখে শোনা যায় বোমা-হুমকি! নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করেন তিনি। বলেন, ‘যারা বলছেন ডোন্ট টাচ মাই বডি, আই অ্যাম মেলস। যারা তাণ্ডব করছেন, গুন্ডামি করছেন। দলের নির্দেশ দিলে ঘটি-বাটি মুড়িয়ে অন্য জায়গায় পাঠিয়ে দেব। কিন্তু দল বলেছে তাণ্ডব নয়, প্রেম চাই। গুন্ডামি তো করাই যায়। এখনই একটা ছেলেকে দিয়ে চারটে বোমা মারলে সব ফাঁকা হয়ে যাবে। কিন্তু তাতে কৃতিত্ব কিছু নেই’, এমনটাই মন্তব্য করে এদিন দিলীপের ঘোষের তোপের মুখে কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র।
'সাধারণ মানুষ সাহস ফিরে পাচ্ছেন'
অপরদিকে, নন্দীগ্রামে সমবায় ভোটে বিজেপির বিপুল জয় প্রসঙ্গেও এদিন কথা বলেন তিনি। দিলীপ ঘোষ বলেন, 'আমরা ২০১৯-এর পর জিততে শুরু করেছিলাম। তারপর শুরু হল গা জোয়ারি এবং একচেটিয়া ভোট। আবার সাধারণ মানুষ সাহস ফিরে পাচ্ছেন। মালদায় হাই মাদ্রাসা ভোটে ব্যাপক হিংসা হয়েছে। এরা শান্তিতে ভোট করতে পারে না। শান্তিতে ভোট হলে জিততে পারে না।'
'ববির প্রমোশন হয়নি'
ফিরহাদের কথায়, কুনালের কথায় বারবার দিলীপ কেন? প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'ববির প্রমোশন হয়নি। দিলীপের হয়েছে। তাই দিলীপ থাকলে তাদের ঘুম হত না। সকাল থেকে আমার পিছনে লাগত। দিলীপ লড়াই করে নিজের জায়গা বানাতে জানে।' এদিন তাপস রায় প্রসঙ্গ টেনে দিলীপ ঘোষ বলেন, 'তাপস দা, শোভনদেব বাবু কিছু ভদ্রলোক। যাঁরা চিরদিন রাজনীতি করছেন। তাঁরা সেভাবেই রাজনীতি করে যাচ্ছেন। যে গুটিকয়েক নেতা আছেন তাদের পক্ষে টিএমসি-তে টিকে থাকাই মুশকিল হয়ে যাচ্ছে তাই মনের দুঃখে মাঝেমধ্যে এসব কথা বলে ফেলেন। দুর্ভাগ্য বাকি জীবনটা তাদের ওই দলেই থাকতে হবে।'
আরও পড়ুন, এসএসসি দুর্নীতি মামলায় ইডি-র চার্জশিটে নাম থাকছে পার্থ, অর্পিতা-র
'কিছু বললে মেয়র চেপে যায়,এটা একটা গভীর সমস্যা'
রাজ্যের আর দশটা রাজনৈতিক ইস্যুর পাশাপাশি এই মুহূর্তে কোভিডের দোসর ডেঙ্গি। আর তা নিয়ে দিনদিন চিন্তাও বাড়ছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, শুধুমাত্র শুক্রবার ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ৫৬৬ জন। রাজ্যে চলতি বছরে মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ১২ হাজার ছাড়িয়েছে। স্বাস্থ্য কর্তাদের আশঙ্কা, নভেম্বরের আগে ডেঙ্গি থেকে রেহাই মিলবে না। এই ইস্যুতে এদিন দিলীপ ঘোষ বলেন, শুধু পুরসভা না। সারা রাজ্য জুড়ে ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত। বড় বড় ইস্যু চলে আসছে। আপনাদের নজরও ঘুরে যাচ্ছে। কিছু বললে মেয়র চেপে যায়। এটা একটা গভীর সমস্যা। দরকারে কেন্দ্রের সাহায্য নিন।'