রঞ্জিত সাউ, কলকাতা: নিউটাউন ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে এসে গুজরাতের সেতু বিপর্যয় নিয়ে মুখ খুললেন বিজেপির সর্বভারতীয়-সহ সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। গুজরাতে সেতু বিপর্যয় রাজনীতি নিয়ে তিনি এদিন বলেন, 'দুর্ঘটনা ঘটেছে। জীবনহানি হয়েছে। দোষীর সাজা পাওয়া উচিত। সরকার খুঁজছে। ৯ জন গ্রেফতার হয়েছে।' এদিন পার্থ ইস্যুতেও কথা বললেন তিনি।


'পোস্তায় নির্মীয়মাণ ব্রিজ ভেঙেছে'


দিলীপ ঘোষ এদিন আরও বলেন, 'পোস্তায় নির্মীয়মাণ ব্রিজ ভেঙেছে। মালে প্রশাসনের তৈরী করা বিপর্যয়, মানুষ মেরেছে। ওখানে সরকার ফিট সার্টিফিকেট দেয়নি।   যারা ইস্যু পান না। দুর্নীতিতে যারা ডুবে আছেন, তারা সেতুর নিচে আশ্রয় পেতে চাইছেন।' প্রসঙ্গত, গুজরাতে নদীতে ব্রিজ ভেঙে ভয়াবহ বিপর্যয়। গুজরাতের মোরবিতে ভেঙে পড়ে কেবল ব্রিজ (Cable Bridge)। দুর্ঘটনার সময় ব্রিজের ওপরে শতাধিক মানুষ ছিলেন। মেরামতির ৪ দিনের মধ্যেই গুজরাতের মোরবিতে ভেঙে পড়ে ব্রিজ। রবিবার রাতের এই ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ের পর মর্মান্তিক দৃশ্য নজরে আসে।  কেউ প্রাণ বাঁচাতে ব্রিজের কেবল ধরে ঝুলছেন, ব্রিজের কেবল ধরে বাঁচার চেষ্টায় কেউ ঝুলছেন ব্রিজের ভাঙা অংশ ধরে। সাঁতরে পাড়ে ওঠার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন অনেকে। চারিদিকে আর্তনাদ! ছটপুজোর সন্ধ্যায় গুজরাতের মোরবিতে ভয়ঙ্কর ব্রিজ-বিপর্যয় যখন বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধিদের অন্যতম অস্ত্র হয়ে উঠেছে তখন গেরুয়া শিবিরেই নেমে এল শোকের ছায়া। মারা গেলেন গুজরাতের বিজেপি নেতার বাড়ির বেশ কয়েকজন। ভয়ঙ্কর এই দুর্ঘটনায় বিজেপি সাংসদ মোহন কুন্ডারিয়ার পরিবারের সদস্যরাও মারা গেছেন। 


'দিদি ওনার সঙ্গে নেই, কারণ, উনি টাকাপয়সার ভাগ দেননি'


সুকান্তর লাঠি নিদান ইস্যুতে তিনি বলেন, ' পঞ্চায়েত আসার আগেই বোমা বন্দুকের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। সরকারি, প্রশাসনিক, সাংবিধানিক শক্তি নেই। পেশী শক্তিকে পেশি শক্তি দিয়েই প্রতিহত করতে হবে। পাশাপাশি পানিহাটিতে দুই কাউন্সিলরের হাতাহাতি ইস্যুতে তিনি বলেন, এটা প্রতিদিন বাড়ছে। কেন্দ্রের পাঠানো টাকা লুঠ হতো। সেটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাই লুঠের টাকার পরিমাণ কমে যাওয়ায় ভাগ বাঁটোয়ারা নিয়ে কোন্দল বাড়ছে। রাজনীতি এখন ব্যবসা। সেই ব্যাবসার মন্দা। তাই এই কোন্দল। পাশাপাশি, 'দলের সাথেই আছি', পার্থর দাবি ইস্যুতে দিলীপ ঘোষ বলেন, 'পার্থ বলছে দলের সাথেই আছি। দল পার্থর সাথে নেই। দিদি ওনার সঙ্গে নেই। কারণ, উনি টাকাপয়সার ভাগ দেননি। এখন বলে লাভ নেই। দল ওকে ছেঁটে ফেলেছে। বাকিরা, অনুব্রত বা মানিক, তারা দিয়ে থুয়ে খেয়েছে। তাই দল ওদের সঙ্গে আছে। ওদের বোঝা বইছে। '


'দুয়ারে সরকার করতে গিয়ে না তো সরকার আছে, না প্রকল্প আছে, না টাকা আছে'


দুয়ারে সরকার নিয়ে তিনি বলেন, 'কেন্দ্র ঠিক করেছে, যে যে প্রকল্পের নাম পাল্টানো হয়েছে, সেখানে কেন্দ্র আর টাকা দেবে না। কারণ যে প্রকল্পের নামে টাকা, সেই প্রকল্প না চললে, কেন টাকা দেবে? দুয়ারে সরকার করতে গিয়ে না তো সরকার আছে, না প্রকল্প আছে, না টাকা আছে। এমনকি কর্মচারিও নেই। নতুন নিয়োগ নেই। পুরো সরকার ডামাডোলে যাচ্ছে।' এবার যে দুয়ারে সরকার প্রকল্প শুরু হয়েছে। তার অধীনে ২টি অতিরিক্ত পরিষেবা চালু হচ্ছে।পাট্টার জন্য আবেদনের সুযোগ পাবেন ভূমিহীনরা। বিদ্যুতের বকেয়া বিলে শর্তসাপেক্ষে মিলবে ৫০ শতাংশ ছাড়। নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আবেদনও করা যাবে। পয়লা নভেম্বর থেকে ১ মাস রাজ্যে ‘দুয়ারে সরকার’ ক্যাম্প হবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এটিই শেষ দুয়ারে সরকার ক্যাম্প৷ এবার, দুটো নতুন পরিষেবা যুক্ত হল। ‘দুয়ারে সরকার’ ক্যাম্পে ভূমিহীনরা পাট্টার আবেদন করতে পারবেন। এর পাশাপাশি, ২০১৮’র মার্চ মাস পর্যন্ত যাদের বিদ্যুতের বিল বকেয়া রয়েছে, তাঁরা এককালীন টাকা জমা দিলে পঞ্চাশ শতাংশ ছাড় পাবেন। এই সুবিধা পাবেন রাজ্য বিদ্যুৎবণ্টন সংস্থার কৃষি এবং গৃহস্থ গ্রাহকরাই।