কলকাতা:  ৪২ দিনের মাথায় প্রেসিডেন্সি জেল থেকে মুক্তি পেলেন নৌশাদ সিদ্দিকি (Naushad Siddique)।  নৌশাদ-সমেত ২১ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। রাতেই পেয়েছিলেন রিলিজ অর্ডার, সকালেই জানান সুপার। বাইরে নৌশাদকে স্বাগত জানালেন আইএসএফ সদস্য সমর্থকরা (ISF Supporters)। 'যদি ভাবে, ভয় পেয়েছি, ভুল করবে। মানুষের জন্য লড়াইয়ে ছিলাম , থাকব', জেল মুক্তির পর হুঙ্কার নৌশাদের।   


প্রসঙ্গত, ২১ জানুয়ারি, দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে ভাঙড়ে তৃণমূলের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন ISF নেতা-কর্মীরা, যার আঁচ এসে পড়ে কলকাতায়। ISF ও পুলিশের খণ্ডযুদ্ধে, অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে ধর্মতলা। গ্রেফতার করা হয় ভাঙড়ের বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকি-সহ আরও অনেক ISF নেতা কর্মীকে। এরপর প্রেসিডেন্সি জেলে রাখা হয় নৌশাদকে।


উল্লেখ্য, নৌশাদের বন্ধুর চেন্নাইয়ের বাড়িতেও কলকাতা পুলিশের অভিযানে বিষয়টি সামনে আসে। তাতে নৌশাদের বন্ধু শেখ সামসুর আলম কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। পেশায় ব্যবসায়ী সামসুর। তাঁর আইনজীবীর দাবি, সামসুর গয়না ব্যবসায়ী। তাঁর বাড়ি চেন্নাইতে। তিনি কোনও ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। ওই ব্যবসায়ী শুধুমাত্র নৌশাদ সিদ্দিকির বন্ধু। 


গত সপ্তাহে নৌশাদ সিদ্দিকির (Noushad Siddique) গ্রেফতারি মামলায় হাইকোর্টের (Calcutta High Court) কড়া প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্য (West Bengal)। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ এদিন প্রশ্ন করে, 'একটা ঘটনায় ৮৮ জন গ্রেফতার? প্রতিরোধমূলক গ্রেফতারির ক্ষেত্রের এতদিন ধরে ৮৮ জন জেলে? এই ধরনের ঘটনায় ১-২ জন নেতাকে হেফাজতে নিলে ঠিক আছে, কিন্তু ৮৮ জন? এই ৮৮ জনের ভূমিকা প্রমাণ করার মতো ভিডিও রেকর্ডিং আছে তো?'


ওই একই দিনে আদালতে নৌশাদের আইনজীবীকে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, 'একজন নেতা বা বিধায়কের এই ধরনের ভূমিকা হয় ? গণতন্ত্রের নামে এই ধরনের আচরণ করা যায়? প্রতিবাদের নামে এই ধরনের অনিয়মিত আচরণ করা যায় কি? এটা একজন নেতার কাছ থেকে আশা করা যায় না', মন্তব্য বিচারপতি বাগচীর।


আরও পড়ুন, কৌস্তভ বাগচী গ্রেফতার হতেই থানার সামনেই বিক্ষোভ কংগ্রেসের


নৌশাদের আইনজীবী প্রশ্ন তোলেন, 'কী কারণে ফের পুলিশি হেফাজতের প্রয়োজন? যা জিজ্ঞাসাবাদ করার, তা তো হয়েছে। তদন্তের জন্য প্রয়োজনে ভিডিও কনফারেন্স করুন। উনি বিধায়ক। রাজবন্দি করে রাখা হোক।' সূত্রের খবর, তখন কাঠগড়া থেকে নৌশাদ সিদ্দিকি বলেন, 'কোনও বিশেষ সুবিধা চাই না। রাজবন্দি হওয়ার প্রয়োজন নেই।' যদিও সেসব এখন অতীত। গ্রেফতারির ৪০দিন পরে শেষপর্যন্ত ৪২ দিনের মাথায় প্রেসিডেন্সি জেল থেকে মুক্তি পেলেন নৌশাদ সিদ্দিকি।