কলকাতা: আজ মহানবমীতে কুমারী পুজো সার্বণ রায়চৌধুরীদের ( Savarna Roy Chowdhury's Kumari Pujo) বড় বাড়িতে। বেলুড়, বাগবাজার-সহ সারা বাংলার একাধিক জায়গায় মহাষ্টমীতে কুমারী পুজো হলেও কলকাতার এই অন্যতম পুজোয় আজই কুমারী পুজো অনুষ্ঠীত হয় প্রতি বছর। উল্লেখ্য, বড়িশার সাবর্ণ রায়চৌধুরীদের বড় বাড়ির পুজোর বয়স ৩০৬ বছর। কৃষ্ণদেব রায়চৌধুরীর হাত ধরে ১৭১৭ সালে এই পুজো শুরু হয়। নবমীর দিন সার্বণ রায়চৌধুরীদের বড় বাড়িতে কুমারী পুজোর পাশাপাশি এদিন ফল বলিও হয়। 


উল্লেখ্য, নবমী নিশি ফুরোলেই তো পুজো শেষ। তাই মন খারাপ করা নবমীর আগে উত্‍‍সবের সুরে ভাসতে তৈরি তিলোত্তমা৷ গতকাল মহাঅষ্টমীর সকালে কুমারী পুজোকে ঘিরেই জমে ওঠে৷ বেলুড় মঠে ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে কুমারীপুজো। এরপর মণ্ডপে মণ্ডপে পুষ্পাঞ্জলি, মাইকে স্তোত্রপাঠ৷ তাই শুনে শুনেই কারও বা মনে মনেই অঞ্জলি দেওয়া৷ দুপুর পেরোলেই সন্ধিপুজো। অষ্টমী পেরিয়ে নবমীতে প্রবেশ।  হাতে আর মাত্র  ১ দিন৷ তাই উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম-সর্বত্রই উত্সবের আনন্দের ঢেউয়ে গা ভাসাতে তৈরি সবাই।  বেলা বাড়তেই সঙ্গে সঙ্গেই মণ্ডপে মণ্ডপে বাড়বে রঙিন জামা-কাপড়ে সাজা মানুষের ভিড়।  বড়দের হাত ধরে ভিড়ের মাঝে কচি-কাঁচারাও৷ শুধু তো ঠাকুর দেখা নয় সঙ্গে দেদার আড্ডা, খাওয়া দাওয়া৷ গত দু’বছর করোনার কারণে বন্ধ থাকলেও, এবছর ফের কুমারী পুজো হচ্ছে জলপাইগুড়ি রামকৃষ্ণ মিশনে। প্রথা মেনে আজ ঠিক সকাল ৯টায় কুমারী পুজো শুরু হবে। তবে এবার দর্শকদের সামনে বসতে দেওয়া হচ্ছে না। দূর থেকেই কুমারী পুজো দেখবেন দর্শনার্থীরা। পাশাপাশি আশ্রম চত্বরে কোভিড বিধি মেনে চলার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।


আরও পড়ুন, পোস্তর বড়া দিয়ে গরম ভাত, মহানবমীতে বাগবাজার সর্বজনীনের মেনুতে আরও কী কী ?


এসময় গঙ্গার পাড়ে প্রকৃতি অন্য কথাই বলে। ভোর থেকেই মনোরম পরিবেশ এখন বেলুড়ে। ফুলে ফুলে শোভিত চারিপাশ। প্রতিবছরের মতো নিয়ম মেনে বেলুড় মঠে জন্মাষ্টমী তিথিতে, প্রথা মেনে অগাস্টেই দুর্গা প্রতিমার কাঠামো পুজো হয়। মূলত, ভাদ্রমাসের কৃষ্ণা অষ্টমীতে মথুরার কারাগারে জন্ম নিয়েছিলেন শ্রীকৃষ্ণ ৷ সেই পূণ্য তিথির স্মরণে এই দেশে মহাআড়ম্বরে পালিত হয় জন্মাষ্টমী ৷ আর সেই তিথিতেই অফিসিয়ালি দুর্গাপুজোর ঢাকে কাঠি পড়ে যায়। প্রতি বছর দুর্গা প্রতিমার বিসর্জনের পর কাঠামো তুলে এনে রাখা হয়। তারপর জন্মাষ্টমীর দিনই পুজো করা হয় সেই কাঠামো। সেইমতো  মন্দিরে মঙ্গলারতির পর কাঠামো পুজো করা হয়। সেইসঙ্গে শুরু হয় মণ্ডপ তৈরির কাজ। অপরদিকে, কলকাতার বনেদি বাড়িগুলির অন্যতম শোভাবাজার রাজবাড়িতে প্রথা মেনে নবমীতে হোম, বলি, আরতি, বিশেষ পুজো শুরু হয়েছে। শোভাবাজার রাজবাড়িতে অন্নভোগের প্রচলন নেই। তার পরিবর্তে চাল, কলা, দুধ, মিষ্টি আর সন্দেশ দিয়ে দেবীকে ভোগ নিবেদন করা হয়। বলি দেওয়া হয় আখ, চালকুমড়ো, মাগুর মাছ। বলির পর আরতি। এরপর অঞ্জলি। বিকেলে মিছরি, জল ও মাখন দিয়ে দেবীকে শীতল ভোগ। রাতে শুকনো মিষ্টি সহযোগে মিঠাই ভোগের আয়োজন।