আশাবুল হোসেন ও কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: বাংলা ভাষায় সম্প্রতি কিছু শব্দের প্রয়োগ নিয়ে বিতর্কের আবহে বাগযুদ্ধে জড়ালেন কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) ও শিল্পী শুভাপ্রসন্ন (Subhaprasanna)। 'উনি দলের কেউ নন। সরকারি কমিটিতে জায়গা লাগবে কিনা কথা বলা হোক', মন্তব্য কুণাল ঘোষের। 'আমরা যখন আন্দোলন করছিলাম তখন কোথায় ছিলেন কুণাল?' পাল্টা প্রশ্ন তুললেন চিত্রশিল্পী (Artist)। পাশাপাশি বাংলা ভাষায় পানি, দাওয়াতের মতো শব্দের ব্যবহার নিয়ে নিজের অবস্থানেই অনড় শুভাপ্রসন্ন।


তৃণমূল কংগ্রেসের  রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন,দলের তরফে ওনার সঙ্গে কথা বলা হোক, কমিটিতে জায়গা লাগবে কিনা। চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্ন বলেছেন, আমরা যখন আন্দোলন করছিলাম, তখন কুণাল ঘোষ, সুবোধ সরকার, নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়িরা কোথায় ছিলেন ? কেউ বলতেই পারেন এ তো গৃহযুদ্ধ। শুভাপ্রসন্ন তৃণমূলের কোনও পদাধিকারী না হলেও তাঁর সঙ্গে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের সম্পর্ক বহু যুগ পুরনো।পালাবদলের সঙ্গী। রাজপথ থেকে তুলি হাতে মঞ্চে। আর সেই শুভাপ্রসন্নর সঙ্গেই কি না এখন তৃণমূলের বেনজির সংঘাত। আর সংঘাত বলে সংঘাত, কার্যত খোদ মুখ্য়মন্ত্রীকেও রেয়াত করতে রাজি নন প্রবীণ শিল্পী। বিতর্কের সূত্রপাত ২১ ফেব্রুয়ারি। 


 আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে বাংলা ভাষায় 'পানি', 'দাওয়াত'-এর মতো শব্দের ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শুভাপ্রসন্ন। ২১ ফেব্রুয়ারির দিন তিনি বলেন, আমরা দেখছি বহু কারণে, নানান সাম্প্রদায়িক ছাপ বাংলা ভাষায় চলে এসেছে। আমরা কোনও দিন বাংলা ভাষায় পানি ব্যবহার করি না। আমরা কোনও দিন কখনও দাওয়াত দিই না। সুতরাং, ভাবতে হবে কোন ভাষা আমাদের ভাষা। দেশপ্রিয় পার্কের সেই অনুষ্ঠানে একইমঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। শুভাপ্রসন্নর বক্তব্যকে খণ্ডন করে দেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। 


মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, শুভাদা অনেক শ্রদ্ধেয়। কিন্তু শুভা’দাকে একটা কথা বলব। দেখুন, কতগুলি শব্দ রয়েছে, যেগুলি সারা বিশ্বের। ‘জল’ বা ‘ওয়াটার’। কিন্তু ওয়াটারকে কেউ কেউ ‘পানি’ বলে। এটা আপনাকে মেনে নিতে হবে। মাকে কেউ ‘আম্মা’ বলে। এটাকে মেনে নিতে হবে। ওরা অতিথিসেবাকে দাওয়াত বলে। এটা বাংলাদেশের ভাষা। যাঁরা ও পার থেকে এ দেশে এসেছেন, তাঁরা এই ভাষাটাকে গ্রহণ করেছেন। আমি মাতৃভাষাকে চেঞ্জ করতে পারি না। 


আরও পড়ুন, 'সব টাকা দিয়ে চাকরি, সরকার কি জানে না', বিস্ফোরক দাবি তৃণমূল কর্মীর


এই ইস্য়ুতে মুখ্য়মন্ত্রীর পাশে দাঁড়ান শিক্ষাবিদ নৃসিংপ্রসাদ ভাদুড়ি ও কবি সুবোধ সরকার। আর তারপরই কার্যত বিস্ফোরণ ঘটান শুভাপ্রসন্ন। পাল্টা তৃণমূলের তরফে আক্রমণে এগিয়ে আসেন কুণাল ঘোষ। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, 'তিনি তো নিজের শিল্প সংস্থার নাম রেখেছন আর্টস একর। তখন তো বাংলা ভাষার ধ্বজা ধরেননি। দলের তরফে ওনার সঙ্গে কথা বলা হোক, কমিটিতে জায়গা লাগবে কিনা। মমতার শুভানুধ্যায়ী হলে মুখ বন্ধ রাখা উচিত।'