কলকাতা: উত্তীর্ণতে বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চ থেকে নাম না করে এদিন এজেন্সি ইস্যুতে কেন্দ্রের মোদি সরকারকে তোপ দাগলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এদিন তিনি বলেন, ‘কী ভাবে এরা? পুলিশকে লাঠিপেটা করে আন্দোলন হয়?, নাকি ঘরে বসে এজেন্সি দিয়ে আন্দোলন? আজ তুমি ক্ষমতায় আছো, অনেক এজেন্সিকে ব্যবহার করছো। কাল তুমি ক্ষমতায় না থাকলে, ঘরে গিয়ে এজেন্সি কান মুলে দেবে।এজেন্সির কানমোলার জন্য তৈরি থাকুন।’
প্রসঙ্গত, তৃতীয়বার সরকার গঠনের আগেই একুশের বিধানসভা নির্বাচন যখন হবে হবে করছে, তখন নারদ মামলায়, শাসকদলের হেভিওয়েটদের নিয়ে বিস্তর টানাটানি হয় । ফিরহাদ-সহ প্রয়াত হেভিওয়েট সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের নাম জড়িয়েছিল।ঘাসফুলের ৪ নেতা-মন্ত্রীর নাম জড়ানোর ইস্যুতেও কম জল ঘোলা হয়নি। তারপর আবার দোসর তখন গরুপাচার মামলা। এদিকে ভোট শেষ হতেই জুড়ে যায় ভোট পরবর্তী হিংসার মামলা। শুধু এই তিনটিই নয়, আরও একাধিক মামলায় জেরবার হয়, রাজ্যের শাসকদল। অধিকাংশ মামলায় আদালতের নির্দেশে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তদন্তের দায়িত্ব তুলে নেয়। যে সকল মামলায় প্রথমে রাজ্যের সিট গঠন হয়েছিল, অধিকাংশ মামলাগুলি পরে হাইকোর্টের নির্দেশ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে দায়িত্বভার চলে যায়।
তবে ভোটের আগেই কেন কেন্দ্রীয় এজেন্সি ? এনিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল সেসময় ঘাসফুল শিবির। কেনই বা অত দীর্ঘ দফায় ভোট, এনিয়েও কম জল ঘোলা হয়নি। মূল বক্তব্য ছিল, এজেন্সি ইস্যু ভোটে প্রভাব ফেলবে নাতো ? প্রশ্নের এহেন সমুদ্রের মাঝেই বিপুল ভোটে জয়ী হয় তৃণমূল। তবে এরপরের ভোটগুলি, কেন একইদিনে নয়, হারের পর প্রশ্ন তোলে বিরোধীরা। উলটপূরাণের এই প্রেক্ষাপটে, তখন তাঁদের যুক্তি ছিল, প্রতি আলাদা দফার ভোটে জয়ী দল প্রভাব ফেলবে। তবে এই পরিস্থিতিতেও নির্বাচন এবং এজেন্সির তদন্ত চলে প্রায় সমান্তরালে। বাইশে পা দিতেই এজেন্সির তদন্ত তরাণ্বিত হয়। ফোকাসে আসে নিয়োগ দুর্নীতি মামলা। আর যা নিয়ে এখনও জেরবার তৃণমূলের সরকার। আর এহেন পরিস্থিতিতেই মমতার মুখে এদিন উঠে এল কড়া মন্তব্য।
আরও পড়ুন, 'আমরা ভুলে যাই, আমরা সবাই রত্নাকর ছিলাম', তাপস আমন্ত্রণ-বিতর্কে বিস্ফোরক মদন
অপরদিকে দুর্গা পুজোর আগে ইতিমধ্যেই গরুপাচার মামলা এবং এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতেও একাধিক নেতা-মন্ত্রী গ্রেফতার হয়েছেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতারের পর মমতাকে পাশে থাকতে দেখা না গেলেও অনুব্রত মন্ডলের পাশে থাকতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। তবে এখানেই শেষ নয়, পার্থ, অনুব্রত-সহ তৃণমূলের একাধিক নেতারা এখন সিবিআই-র স্ক্যানারে। পুজোর আগে কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে ভয় দেখাতে পারবে না , বলে শাসকদলের ব্যানারও পড়েছিল শহরে। তারপর গঙ্গায় অনেক জল বয়ে গিয়েছে, তৃণমূলের বড় বড় দুই সমাবেশের পর এদিন ফের নাম না করেই কেন্দ্রকে নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী।