কলকাতা: দশ দিনের জেল হেফাজতের (Jail Custody) শেষে আজ আবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে (Court) পেশ করা হল বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকিকে (Naushad Siddique) । আদালতে প্রবেশের সময় নৌশাদ বলেন, 'তিনি ভেবেছিলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ তাঁর কাস্টডিয়ান হিসাবে কথা বলবেন। কিন্তু তিনি কী বলেছেন জানা নেই। তবে তিনি নিজে আইনের পথেই হাঁটবেন।'


কয়েকদিন আগেই নৌশাদের ইস্যুতে মুখ খোলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ। 'নৌশাদ সিদ্দিকির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ আদালত বিচার করবে। আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়, বিধায়ক বলে কোনও বিশেষ সুবিধা পাবেন না। তাঁর নেতৃত্বে এত বড় ঘটনা ঘটেছে, যা কলকাতার মানুষ বহুদিন দেখেনি। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে এই ধরনের ঘটনার নেতৃত্ব দেওয়া অত্যন্ত নিন্দনীয়', মন্তব্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের। 


সম্প্রতি নৌশাদ সিদ্দিকির গ্রেফতারি মামলায় হাইকোর্টের কড়া প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্য। 'একটা ঘটনায় ৮৮ জন গ্রেফতার? প্রতিরোধমূলক গ্রেফতারির ক্ষেত্রে এতদিন ধরে ৮৮ জন জেলে ? এই ধরনের ঘটনায় ১-২ জন নেতাকে হেফাজতে নিলে ঠিক আছে, কিন্তু ৮৮ জন? এই ৮৮ জনের ভূমিকা প্রমাণ করার মতো ভিডিও রেকর্ডিং আছে তো?' রাজ্যকে প্রশ্ন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চের। পাশাপাশি নৌশাদের আইনজীবীকেও প্রশ্ন করেছেন বিচারপতি। 'একজন নেতা বা বিধায়কের এ ধরনের ভূমিকা হয়? গণতন্ত্রের নামে এধরনের আচরণ করা যায়? প্রতিবাদের নামে এ ধরনের অনিয়মিত আচরণ করা যায় কি?' নৌশাদের আইনজীবীকে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। 'এটা একজন নেতার কাছ থেকে আশা করা যায় না', মন্তব্য বিচারপতি বাগচীর। বুধবার মামলার পরবর্তী শুনানি।


আরও পড়ুন, দেওয়া হল না সাক্ষ্য, আদালতের পথেই অসুস্থ অভিজিৎ সরকারের মা


প্রসঙ্গত, ২২ জানুয়ারি, সেদিন ছিল শনিবার। ভাঙড়ে তৃণমূলের সঙ্গে ISF-এর সংঘর্ষের আঁচ এসে পড়েছিল ধর্মতলায়। ISF-এর অবরোধ, পুলিশের লাঠি-কাঁদানে গ্যাসে। অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল শহরের প্রাণকেন্দ্র। সেদিন ভাঙড়ের ISF বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকি-সহ ১৯ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মাঝে কেটে গেছে গোটা একটা সপ্তাহ। নৌশাদ সিদ্দিকির গ্রেফতারির প্রতিবাদে একাধিক আন্দোলন-কর্মসূচি করেছে ISF। ঘণ্টায় ঘণ্টায় রাস্তা অবরোধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পিরজাদারা। যদিও, আদালতের নির্দেশে এখনও পুলিশ হেফাজতেই রয়েছেন ISF বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকি সহ একাধিক কর্মী-সমর্থক। বেছে বেছে ISF কর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। তৃণমূল ও পুলিশের যোগসাজশে পঞ্চায়েত ভোটের আগে মনোবল ভাঙার চেষ্টা হচ্ছে। সংঘর্ষের ঘটনায় বিস্ফোরক অভিযোগ করে আইএসএফ। অভিযোগ মানতে নারাজ তৃণমূল।