কলকাতা: নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় (Recruitment Scam) উঠে এল ফের চাঞ্চল্যকর তথ্য, (Tapas Mandal) তাপস মণ্ডল-সহ অন্যান্যদের নিয়ে আদালতে নয়া দাবি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার (CBI)। 


'২০১৪-র প্রাথমিকে নিয়োগ-দুর্নীতিতে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তাপস মণ্ডলের। বিপুল টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের চাকরি দিতে বড় ভূমিকা ছিল তাপসের। সেই টাকার ভাগ পৌঁছেছে কুন্তল ঘোষ ও অন্যান্য প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের কাছে',তাপস মণ্ডল ও অন্যান্যদের জেরায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য, আদালতে দাবি সিবিআইয়ের। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আরও দাবি, 'তাপস ও অন্যান্য অভিযুক্তদের মুখোমুখি জেরায় বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের প্রমাণ মিলেছে', তাই হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজনীয়তা প্রয়োজন, দাবি সিবিআইয়ের। 


CBI সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, মূলত ৩টি কারণে গ্রেফতার হয়েছেন মানিক ভট্টাচার্য ঘনিষ্ঠ তাপস। প্রথমত, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ হলেন তাপস। তিনি যে টাকা নিয়েছেন এবং দিয়েছেন, তা যে বেআইনি কাজের জন্য, সেটা জেনেবুঝেই করেছেন। দ্বিতীয়ত, টাকা লেনদেনের হ্যান্ডলার হিসেবে কাজ করেছেন মানিক ভট্টাচার্য ঘনিষ্ঠ তাপস। তৃতীয়ত, সূত্রের দাবি, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ যে অডিও ক্লিপ CBI-এর হাতে তুলে দিয়েছেন, তাতে তাপসকে বলতে শোনা যায়, ৫০ লক্ষ টাকা দিলে তিনি CBI বা ইডি-র কাছে মুখ খুলবেন না। 


অপরদিকে, কার হাত থেকে টাকা কার কাছে গেছে? মাথা কে? এজেন্ট-সাব এজেন্টদের নিয়ে নাড়া চাড়া হলেও, আসল মাথার খোঁজ কোথায় ? এই প্রশ্ন উত্তর খুঁজে পেতেই এখন CBI-এর নজরে তাপস মণ্ডল, কুন্তল ঘোষ, নিলাদ্রী ঘোষের ত্রিভূজ। এই কারণেই স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়, মোট সাতজনকে আলিপুরের বিশেষ CBI আদালতে তোলা হলেও, তাপস, কুন্তল ও নিলাদ্রীকেই শুধুমাত্র হেফাজতে চেয়ে আর্জি জানায় CBI। আদালতে তাদের আইনজীবী দাবি করেন, ওই তিনজনের বিরুদ্ধে তাঁদের কাছে পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ রয়েছে। কোথা থেকে টাকা এল, কোথায় সেই টাকা গেল? এবং এর সঙ্গে কোন প্রভাবশালীর যোগ রয়েছে, তা খুঁজে বের করতে হবে। তার জন্য তিনজনকে একসঙ্গে বসিয়ে জেরা করতে হবে। ওই তিনজনই টাকা আদায় করেছেন।


আরও পড়ুন, হাতির তাণ্ডবে জেরবার, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা বন দফতরের


অন্যদিকে নিলাদ্রী ঘোষের হয়ে আইনজীবী সওয়াল করেন, তিনি কাউকে চাকরির পাইয়ে দেওয়ার কথা বলেননি। নিলাদ্রীর আইনজীবী CBI-এর উদ্দেশে প্রশ্ন তোলেন, টাকা নেওয়ার অভিযোগ তোলা হচ্ছে। কাদের থেকে টাকা নিয়েছে? তখন বিচারক বলেন, কাদের থেকে টাকা নিয়েছেন, সেটা আমি ইতিমধ্যেই তদন্তকারীদের কাছে জানতে চেয়েছি। সবপক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর, কুন্তল, তাপস ও নিলাদ্রীকে ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত CBI হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। বাকি ৪ জন এজেন্টকে দোসরা মার্চ পর্যন্ত জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।