ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা : আলোর উৎসবের মরশুম। এর মাঝেই অন্যের জীবনের অন্ধকার দূর করার অনন্য এক নজির। নিজেদের কাছের মানুষকে হারালেও, একসঙ্গে একাধিক জনকে নতুন প্রাণের সন্ধান দিয়ে গেলেন তরুণের পরিবারের লোকজন। ২১ বছরের এক তরতাজা তরুণ গুরুতর দুর্ঘটনার পর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু ব্রেন ডেথ হয় তাঁর। আর একুশ বছরের তরুণের ব্রেন ডেথ ঘোষণার পর অঙ্গদানের (Organ Transplant) সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার।
জানা যাচ্ছে, ওই তরুণের দুটি ফুসফুস, লিভার এবং একটি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হবে অ্যাপোলো হাসপাতালেই (Apollo Hospital)। যে হাসপাতালেই দীর্ঘ ১৩ দিন ভেন্টিলেশনে জীবনযুদ্ধের অসম লড়াই চালাচ্ছিলেন ওই তরুণ। পাশাপাশি একটি কিডনি প্রতিস্থাপিত করা হবে রুবি জেনারেল হাসপাতালে (Ruby General Hospital)। আর হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন করা হবে এসএসকেএম হাসপাতালে (SSKM Hospital)। গ্রিন করিডরের মাধ্যমে যা পৌঁছবে রুবি ও এসএসকেএম হাসপাতালে।
হাসপাতাল ও পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে, গত ৪ নভেম্বর ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়েন ওই যুবক। ২১ বছরের যুবকটিকে তারপর ভর্তি করা হয়েছিল কলকাতা বাইপাসের ধারে অ্যাপেলো হাসপাতালে। যেখানে দীর্ঘ ১৩ দিন ধরে ভেন্টিলেশনে ছিলেন তিনি। কিন্তু দুর্ঘটনার অভিঘাত এতটাই গুরুতর ছিল যে, কোনও চিকিৎসাতেই সাড়া পাওয়া যায়নি তাঁর। ক্রমশ বরং অবস্থার অবনতি হতে থাকে। শেষপর্যন্ত তাঁকে ব্রেন ডেথ ঘোষণা করেন চিকিৎসরা।
বাড়ির ২১ বছরের তরতাজা ছেলের ব্রেন ডেথ হওয়ার শোকের মাঝেই অন্যের অন্ধকার জীবনে আলো জ্বালানোর কাজটা করেন তাঁর পরিবারের লোকজন। তাঁরা সম্মতি দেন অঙ্গদানের। যারপর কার্যত ওই যুবকের শরীরের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গই প্রতিস্থাপনের জন্য দেওয়া হয়। আলোর উৎসবের মরশুমে এভাবে অঙ্গদানের অনন্য নজিরে খুশি চিকিৎসকরা।
তরতাজা যুবকের ব্রেন ডেথ হওয়ার পর তাঁর মাধ্যমে যাতে অন্যদের অন্ধকারে জীবনে আলো জ্বালানো যায়, সেটা বুঝিয়ে যুবকের পরিবারের কাছে আর্জি জানান চিকিৎসকরা। গোটা বিষয়টা শুনে তাঁরাও সম্মত হন অঙ্গদানের অঙ্গীকারের সঙ্গী হতে। যারপরই খোঁজ শুরু হয় এই মুহূর্তে কাঁদের কাঁদের নতুন অঙ্গের প্রয়োজন। সেই ভিত্তিতেই হয় পরবর্তী সিদ্ধান্ত। আশা করা হচ্ছে, যুবকের থেকে পাওয়া একাধিক অঙ্গের সাহায্যে অনেকেই নতুন করে জীবন শুরু করতে পারবেন। আর শহরে ফের একবার অঙ্গদানের নজিরে খুশি চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন- শীতের আমেজে নিম্নচাপের ফলা, চলতি সপ্তাহে রাজ্যের কোন জেলায় কেমন বৃষ্টি-শঙ্কা ?