সঞ্চয়ন মিত্র, কলকাতা : সাতসকালে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘিরে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল বেহালা। মাটিবোঝাই লরির ধাক্কায় প্রাণ গেল বড়িশা হাইস্কুলের প্রাইমারি সেকশনের পড়ুয়ার। নাম সৌরনীল সরকার (৭)। গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তার বাবা সরোজকুমার সরকারকে। পরে তাঁকে এসএসকেএম-এর ট্রমা কেয়ার সেন্টারের নিয়ে যাওয়া হয়। দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ অবস্থা বেহালায়। মৃতদেহ আটকে রেখে চলছে বিক্ষোভ। উত্তেজিত জনতা সরকারি বাসে ভাঙচুর চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নামানো হয় পুলিশ-ব়্যাফ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, আজ সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ দ্বিতীয় শ্রেণির ওই পড়ুয়া তার অভিভাবকের সঙ্গে স্কুলে যাচ্ছিল। বেহালা চৌরাস্তার মোড়ে একটি ট্রাক শিশুটিকে ধাক্কা মারে। সঙ্গে সঙ্গে পড়ুয়ার মৃত্যু হয়। অভিভাবক তথা শিশুটির বাবাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁকে এসএসকেএম-এর ট্রমা কেয়ার সেন্টারের নিয়ে যাওয়া হয়।।
ঘটনার প্রতিবাদে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, সিগন্যাল পড়ে যাওয়ার পর বাবার সঙ্গে সাইকেলে পাড় হচ্ছিল ওই বাচ্চাটি। অপর দিক থেকে একটি কর্পোরেশনের ট্রাক এসে বাচ্চাটির মাথা পিষে দিয়ে চলে যায়। দুর্ঘটনার পর লরিটিকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। কোনও গার্ড নেই এখানে।
ঘটনার প্রতিবাদে উত্তেজিত হয়ে পড়েন এলাকাবাসী। পুলিশের গাড়ি ও একটি বাইকে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। যান নিয়ন্ত্রণ নিয়ে একাধিক অভিযোগ তুলে বেহালা চৌরাস্তা চত্বরে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসী। পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়া ও নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ ওঠে। ঘটনার জেরে স্তব্ধ হয়ে যায় ডায়মন্ড হারবার রোড। আটকে পড়ে একের পর এক গাড়ি।
এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে নামনো হয় পুলিশ। নামে ব়্যাফও। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। সেই সময় পুলিশ ও ব়্যাফের সঙ্গে তুমুল বচসায় জড়িয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। শুরু হয় পুলিশি ধরপাকড়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয় ইট। রক্ত ঝরে পুলিশের, রক্তাক্ত স্থানীয় বিক্ষোভকারীরাও।
ঘণ্টা দু'য়েক পর শিশুটির মৃতদেহ সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের যে ভ্যান ও বাইকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল, দমকল এসে তা নেভানোর কাজ শুরু করে। আগুন নেভানোর পর সেগুলি রাস্তা থেকে সরানোর কাজ শুরু হবে। এখনও পর্যন্ত পর্যন্ত মানুষ বীরেন রায় রোডে জমায়েত করে রয়েছেন। এদিকে অবরোধ তুলে দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে পুলিশ। নতুন করে যাতে উত্তেজনা না ছড়ায় তাই এলাকায় ব়্যাফ, কমব্যাট ফোর্স মোতায়েন রয়েছে।