সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: ফ্ল্যাট দুর্নীতিতে (Flat Fraud) নাম জড়ানোর পর বুধবার মুখ খুলেছিলেন তারকা-সাংসদ নুসরত জাহান (Nusrat Jahan)। বলেছিলেন, 'এই কোম্পানি থেকে আমি একটা লোন (loan) নিয়েছিলাম, লোনের অঙ্ক হচ্ছে ১ কোটি ১৬ লক্ষ ৩০ হাজার ২৮৫ এবং ৬ মে, ২০১৭-য় সুদ-সহ ১ কোটি ৪০ লক্ষ ৭১ হাজার ৯৯৫ টাকা, আমি এই কোম্পানিকে ফেরত দিই এবং এই সমস্ত ব্যাঙ্ক ডিটেইলস আমার কাছে আছে।' অর্থাৎ, যে সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, সেই সংস্থা থেকেই ঋণ নিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন নুসরত জাহান। তার তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পাণ্ডা। ঋণ প্রয়োজন হলে কেন ব্যাঙ্কে যাননি সেই প্রশ্ন করেছিলেন তিনি।
কিন্তু কোনও সংস্থার ডিরেক্টর কি এভাবে সেই সংস্থা থেকেই লোন নিতে পারেন? আইন কী বলছে? নুসরতের এই দাবির কি আদৌ যুক্তি আছে? এবিষয়ে কোম্পানি আইন কী বলছে? কোনও সংস্থার ডিরেক্টর কি সেই সংস্থা থেকে ঋণ নিতে পারেন? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমনটা করাই যায় না! আইনজীবী শুভাশিস চক্রবর্তী বলেন, 'কোম্পানি রুল অ্যাক্টে স্পষ্ট করে বলা আছে, কোনও কোম্পানির ডিরেক্টর নিজের কোম্পানির থেকে ঋণ নিতে পারেন না। যে কোম্পানি ঋণ দিয়েছে, বা যিনি নিয়েছেন দুজনেই অভিযুক্ত।' নুসরত জাহান দাবি করছেন, তিনি ঋণ নিয়ে ফ্ল্যাট কিনেছেন। নিয়ম অনুযায়ী, ডিরেক্টর নিজের কোম্পানি থেকে ঋণ নিতে পারেন না। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাহলে নিশ্চিতভাবে কোনও গরমিল হয়েছে। আইনজীবী অরিন্দম দাস বলেন, 'এক্ষেত্রে ঋণ নেওয়া যায় না, ওই কোম্পানির ঋণ দেওয়ার অথরিটি আছে কি না? অথরিটি না থাকলে ঋণ দেয় কী করে?' সব মিলিয়ে নুসরতের ঋণ নেওয়ার দাবি ঘিরেই এখন উঠছে একাধিক প্রশ্ন।
কী অভিযোগ:
কোটি কোটি টাকা নিয়ে, ফ্ল্যাট না দিয়ে, সেই টাকায় নিজের ফ্ল্যাট কেনার অভিযোগ উঠেছে বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানের বিরুদ্ধে। অভিযোগকারীদের দাবি, রাজারহাটে ফ্ল্যাট তৈরির জন্য 'সেভেন সেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড' নামে একটি সংস্থা, ৪২৯ জনের থেকে ৫ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা করে নেয়। যার মোট অঙ্ক দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৮ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা। কিন্তু ৯ বছরেও তাঁরা কেউ ফ্ল্যাট পাননি বলে অভিযোগ।উল্টে, তাঁদের টাকা দিয়ে ওই সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর নুসরত জাহান ফ্ল্যাট কেনেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন: আয়কর-রিফান্ডের মেসেজ পেয়েছেন? সেখানে লিঙ্ক রয়েছে? তাহলে সাবধান