কলকাতা: এসএসসি (SSC) চেয়ারম্যানের সঙ্গে চাকরিপ্রার্থীদের (Job Seeker) বৈঠকেও কাটল না জট। নিয়োগের বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারল না এসএসসি।   এসএসসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে এদিন প্রায় পৌনে ১ ঘন্টা বৈঠক হয় চাকরি প্রার্থীদের। তবে শেষ অবধি জট কাটেনি বলেই খবর। 


প্রসঙ্গত,  দুর্গাপুজোর পর কালীপুজোও কেটেছে SSC চাকরিপ্রার্থীদের রাস্তায় বসে। মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির সামনে ধর্নায় রয়েছেন SSC চাকরিপ্রার্থীরা । উৎসবের মরশুমেও ওঁদের জীবনে শুধুই অন্ধকার। পরিবার-পরিজন ছেড়ে পথের ধারেই কাটছে দিন। তবুও হকের চাকরির দাবিতে আন্দোলনে অনড় SSC চাকরিপ্রার্থীরা। এবার পুজোয় রাজ্যবাসীর মনে কাঁটার মতো বিঁধেছে চাকরিপ্রার্থীদের রাস্তায় বসে আন্দোলন। এই সমস্যার সমাধান না হলে মানুষের মনে শান্তি আসবে না। সম্প্রতি এই মন্তব্য করেন দিলীপ ঘোষ। ভরা পুজোর মাঝে যখন প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ভিড়, রাস্তাঘাটে আলোর রোশনাই, তখন ভিন্ন দৃশ্য শহরের একপ্রান্তে। উৎসবের চিহ্নটুকুও নেই, আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীদের মনে।


কারোর চোখে জল, কারোর আবার কথা বলতে গিয়ে গলা বুজে আসছে। ঝাপসা হচ্ছে চোখ, পরিবারের কথা বলতে গিয়ে ধরে রাখতে পারছেন না চোখের জল। বঞ্চনার অভিযোগে উৎসবের দিনেও রাস্তায় অবস্থান করছেন তাঁরা। ঘর-বাড়ি ভুলে নিয়োগের দাবিতে সরব তাঁরা। গোটা পুজোটাই কেটেছে রাস্তায় বসে। পুজোয় গোটা শহর আলোর উত্‍সবে মাতলেও, অন্ধকারেই রইলেন চাকরিপ্রার্থীরা। ভাইফোঁটার দিন কান্নায় ভেঙে পড়েন  SLST-র একজন চাকরিপ্রার্থী।   মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির সামনে  চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থান ৫৯২ দিনে পড়ল। ভাইফোঁটার দিনেও সেই অন্ধকারেই চাকরিপ্রার্থীরা। নবম থেকে দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থীদের এই অবস্থান আন্দোলনের জল গড়িয়েছে রাজনীতির আঙিনাতেও।  SSC-কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে শিক্ষামন্ত্রী। চাকরিপ্রার্থীরা একের পর এক বৈঠক করেছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁদের নিয়োগের দাবির সুরাহা হয়নি।  


আরও পড়ুন, ধোপে টিকল না পুলিশের সওয়াল, অরুণিমা-সহ ৩০ জনেরই জামিন


চাকরিপ্রার্থীরা বলছেন,'মুখ্যমন্ত্রী ২০২০ সালে বলেছিলেন প্রাইমারি প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত সবার নিয়োগ হবে। ২০১৪ সালে আমার টেট পাশ করেছি। দুবার ইন্টারভিউ দিয়েছি, আমরা প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত। কিন্তু এখনও পর্যন্ত আমরা বঞ্চিত। বাংলার আকাশে বাতাসে পুজো। কিন্তু হতাশার অন্ধকারে নিমজ্জিত আমরা। কোনও আশার আলো দেখতে পাচ্ছি না।' দেবীপক্ষেও আন্দোলনরত ছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা মায়েদের গলায় আক্ষেপের সুর। এক চাকরিপ্রার্থী বলছেন, 'আমরা সন্তানটাও এবার পুজো আমাকে ছাড়াই কাটাবে। মাঝেমধ্যেই বলে, বলেছিলে চাকরি পেলে ভাল জামা কিনে দেবে, কবে দেবে কিনে', আরেক চাকরিরপ্রার্থীর কথায়, 'সন্তানকে বাধ্য হয়ে বাড়িতে রেখে দিয়ে আসতে হচ্ছে। এটা খুবই যন্ত্রণার। বাড়িতে ঠিক করে খায় কিনা জানি।'