কলকাতা: বৃহস্পতিবার এসএসসি চাকরি প্রার্থীদের ধর্ণামঞ্চে সরব বামনেতা সুজন চক্রবর্তী (Sujan Chakraborty)। 'টাকার বিনিময়ে চাকরি' ইস্যুতে এদিন প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন তিনি। মূলত, এসএসসি দুর্নীতি মামলায় শাসকদলের একের পর এক নেতা-মন্ত্রীকে তলব এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতারের পর এমনিতেই এই প্রতিবাদ আরও দিন দিন জোরালো হয়ে উঠছে। এদিকে এহেন কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেই টিএমসিপি-র প্রতিষ্ঠা দিবসে বামেদের চাকরি ইস্যুতে একের পর এক প্রশ্ন ছুঁড়ে তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আর এবার এসএসসি চাকরি প্রার্থীদের ধর্ণামঞ্চে এসে প্রতিক্রিয়া দিলেন সুজন।


এদিন সুজন চক্রবর্তী বলেন, ' ধর্ণায় বসে আছেন বাংলার ভবিষ্যতের মাস্টার মশাইয়েরা। যাদের পরিচয় হবার কথা ছিল মাস্টারমশায়, তাঁরা এখন রাস্তায় বসে আছে, এর থেকে লজ্জার কিছু হতে পারে না। অনুব্রত মণ্ডলের টাকা, তোমাদের বঞ্চনার টাকা। তোমরা যোগ্যতা টানা এই  লড়াইটা পালন করে যাচ্ছ।আমি তোমাদের স্যালুট জানাই। আমাদের সমাজের যারা বড়ো, যারা সমাজ চালাচ্ছে, তাঁদের অপরাধের কথাটা তোমাদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে আসাটাই মূল উদ্দেশ্য।'


অগাস্টের শেষে, কলকাতার মেয়ো রোডে টিএমসিপি-র প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে তৃণমূলের বিরাট সমাবেশে উপস্থিত হয়  চাকরি ইস্যুতে বামেদের তোপ দাগেন মমতা।  কত চাকরি বাম আমলে ? এবং কত চাকরি তৃণমূলের সরকারের আমলে হয়েছে ? পরিসংখ্যান চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  মমতা বলেন, 'আপনারা বলুন তো, কত ছেলে মেয়ে চাকরি পেয়েছে আমাদের আমলে ? সিপিএম তোমার আমলে, লিস্ট কোথায় ? আলমারি কোথায় ডকুমেন্ট কোথায় ? কারা চাকরি পেয়েছে ? পয়সা নিয়েছো , আর চাকরি দিয়েছো।  তাই সিস্টেমটা ওরাই ভাল জানে। আজকে তৃণমূলকে বলছে চোর। আমি যদি আজ রাজনীতি না করতাম, আর এই চেয়ারে না থাকতাম, আমি আমার বোনেদের বলতাম, যারা এই মিথ্যে কথা রটনা করে, তাঁদের জিভগুলিকে টেনে খুলে দিতে।' এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, স্কুল সার্ভিস মনে রাখবেন, স্কুল এবং কলেজ নিয়ে মাত্র ১০ বছরে আমরা ১ লক্ষ ৬৩ হাজার ৯৭০ টি চাকরি দিয়েছি।' 


আরও পড়ুন,  'শুধু তৃণমূল নাকি ? বাম জমানার লোক সরকারি চাকরি করছে না ?', কল্যাণ ইস্যুতে বিস্ফোরক কুণাল


মূলত বাইশ সালে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জেরবার শাসকদল। একের পর এক তৃণমূলের হেভিওয়েটদের নাম জড়িয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছেন বর্তমান শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারী  থেকে প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিশেষ করে কম নম্বর পেয়েও কী করে চাকরি পেলেন পরেশ কন্যা, প্রশ্ন তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ববিতা সরকার। ইতিমধ্য়েই হাইকোর্টে বিচারপতির  নির্দেশে মন্ত্রী কন্যাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এখানেই শেষ নয় শুধু মন্ত্রী কন্যা নয়, পরেশের পরিবারের আরও একাধিক জনের এসএসসি-তে চাকরি হওয়া নিয়ে চাঞল্যকর তথ্যও প্রকাশ্যে আসে। একদিকে চাকরির দাবিতে দিনের পর দিন আন্দোলন চালিয়েছে  পাশ করা শিক্ষার্থীরা। আর তারই মাঝে এদিন বিস্ফোরক সুজন চক্রবর্তী।