নারকেলডাঙা : বেলেঘাটার (Beleghata) পর এবার নারকেলডাঙা (Narkeldanga)। তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলে উত্তপ্ত নারকেলডাঙার ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড। তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে মাথা ফাটল তৃণমূলকর্মীর। ক্যানেল ওয়েস্ট রোডে পার্কের বদলে ভ্যাট তৈরি নিয়ে বিবাদ। তৃণমূল কাউন্সিলর ও তাঁর অনুগামীদের সঙ্গে দলেরই একাংশের বিবাদ। ঘটনা ঘিরে দু’পক্ষের হাতাহাতিতে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। ‘স্থানীয় বাসিন্দারা চাইলেও পার্ক তৈরি করতে দেননি তৃণমূল কাউন্সিলর’, এমনই অভিযোগ করে তৃণমূলকর্মীদের একাংশ। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল কাউন্সিলর (TMC Councilor) সচিন সিংহ।
গত ৩০ এপ্রিল, বেলেঘাটায় ফের প্রকাশ্যে চলে আসে তৃণমূল কাউন্সিলর অলকানন্দা দাসের সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল নেতা রাজু নস্করের গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব! পুলিশের সামনেই গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে রাজু নস্করের বিরুদ্ধে। ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় এলাকায়। দু'পক্ষের সংঘর্ষের আহত হন বেশ কয়েকজন।
ঘটনার দিন দুপুর ১২টা থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত এলাকাতেই ছিলেন অন্যতম অভিযুক্ত স্থানীয় তৃণমূল নেতা রাজু নস্কর। বেলেঘাটার তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পালের পাশেই তাঁকে দেখা গিয়েছিল! কিন্তু তারপর হঠাৎ তাঁকে ফেরার বলে দাবি করে পুলিশ।
এর ৮ দিনের মাথায়, ওড়িশার গোপালপুরের একটি রিসর্ট থেকে গিরিশ পার্ক থানার পুরনো একটি অস্ত্র মামলায় রাজুকে গ্রেফতার করে লালবাজারের গুন্ডাদমন শাখা।
কিন্তু, কীভাবে কলকাতা থেকে ৬১১ কিলোমিটার দূরের ওড়িশার গোপালপুরে হদিশ মিলল রাজু নস্করের ? পুলিশ সূত্রে খবর,
রাজুর ফেরার হওয়ার পর বেলেঘাটা চত্বর থেকেই পুলিশের হাতে আসে একটি সিসিটিভি ফুটেজ। সেখানে একটি জিঙ্ক কালারের ফরচুনার গাড়ির ছবির সূত্র ধরেই ওড়িশার গোপালপুরের রিসর্টে পৌঁছে যায় লালবাজারের গুন্ডা দমন শাখা।
পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার, ওড়িশা চত্বরে ঘুরলেও কোনও হোটেল বা রিসর্ট নেননি রাজু নস্কররা। রিসর্ট কর্তৃপক্ষ জানায়,
শনিবার দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ জিঙ্ক কালারের ফরচুনার গাড়িতে আসেন রাজু-সহ ৪জন। রিসেপশনে আধার কার্ড দেখিয়ে রিসর্টের ১০৬ ও ১০৭ নম্বর রুম নেন তাঁরা।
খবর পেয়ে, গোপালপুর থানার পুলিশ আধিকারিকদের নিয়ে এই রিসর্টে আসে লালবাজারের গুন্ডাদমন শাখার অফিসাররা। জিঙ্ক কালারের ফরচুনার গাড়ির ছবি দেখিয়ে পুলিশ নিশ্চিত হয়, এই রিসর্টেই রয়েছেন রাজু ও তাঁর শাগরেদরা। সূত্রের খবর, বেলেঘাটার অশান্তির ঘটনায় ইতিমধ্যে লালবাজারে গিয়ে রাজু নস্করকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বেলেঘাটা থানার পুলিশ। এই প্রেক্ষাপটে নতুন করে ৫ জনকে গ্রেফতার করে বেলেঘাটা থানার পুলিশ। এ নিয়ে বেলেঘাটার অশান্তির ঘটনায় মোট ২৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়।