কলকাতা: উত্তর (North Kolkata) থেকে দক্ষিণ কলকাতার (South Kolkata) অধিকাংশ বাজারেই খোকা ইলিশের (Hilsha) ছড়াছড়ি। প্রায় সর্বত্রই মিলছে ১০০ থেকে ২০০ ওজনের মাছ। ইলিশ বাঁচাতেই, দীর্ঘদিন ধরে খোরা ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তার জন্য় মাছ ধরার সময়ে বড় আকারের জাল ব্য়বহারসহ একাধিক নির্দেশিকা রয়েছে। কিন্তু কোথায় সে সব? বাজারে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে খোকা অর্থাৎ ছোট ইলিশ। দাম কোথাও সাড়ে তিনশো তো কোথাও ৪০০ টাকা কেজি।


ভরা শ্রাবণ প্রায় শেষ হতে চলেছে। তবু ভরা বর্ষায় গঙ্গা অথবা রূপনারায়ণে সেভাবে দেখা নেই বাঙালির প্রিয় ইলিশের।  মৎস্যজীবীরা যন্ত্রচালিত নৌকা নিয়ে নদীর মোহনাতে মাছ ধরতে গেলেও জালে ইলিশের দেখা নেই। ফলে সমস্যায় পড়েছেন মৎস্যজীবীরা। তাঁরা আগেওজানিয়েছেন, জলবায়ুর পরিবর্তনের সঙ্গে ছোট অবস্থায় ইলিশ অতিরিক্ত ধরার কারণে এই সঙ্কট তৈরি হয়েছে। ২০২১-এ মৎসমন্ত্রী জানিয়েছিলেন ইলিশ বাঁচাতে ৬১ দিনের বদলে ১২০ দিন মাছ ধরা বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছিল  রাজ্য সরকার।


ফি-বছর বর্ষায় গঙ্গা অথবা রূপনারায়ণের বুকে ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকা অথবা যন্ত্রচালিত নৌকা নিয়ে ইলিশ মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন কয়েক হাজার মৎস্যজীবী। টাটকা ইলিশ বিক্রি করে বাজার থেকে ভালই দাম পান মৎস্যজীবীরা। এমনকি কলকাতা থেকেও টাটকা ইলিশ কিনতে গাদিয়াড়া আসতেন বহু মানুষ। কিন্তু পরপর কয়েক বছরের বছরের ছবিটা সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে। পেট্রোল ও ডিজেল খরচ করে নদীর বুকে অথবা মোহনা পর্যন্ত গেলেও সারা দিনে জালে দু-তিন কেজির বেশি ইলিশ উঠে না। এতে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন মৎস্যজীবীরা। অন্যদিকে হতাশ হচ্ছেন ভোজনরসিকরাও। 


বিশেষজ্ঞরা জানান, নদীর মোহনাতে যন্ত্রচালিত নৌকা এবং ট্রলারগুলি অতিরিক্ত ছোট সাইজের জাল ব্যবহার করে ছোট সাইজের খোকা ইলিশ ধরার ফলে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। এর পাশাপাশি নদীর গভীরতা কমে যাওয়ার সঙ্গে আবহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে নদীতে জলের প্রবাহ এবং ঘোলাটে ভাব কমে যাওয়ার কারণে ইলিশ সাগর থেকে নদীর মিষ্টি জলে ঢুকছে কম। এর সঙ্গে নদীর দূষণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে। শেষ কয়েকবছর নজরদারি বাড়ানো হয়েছিল, তাতে ৫০০ গ্রামের কম মাছ ধরা কমলেও তা খুব বেশি লাভজনক হয়নি।