ময়ুখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা:গত কাল পার্ক স্ট্রিটে (park street) ভারতীয় জাদুঘরে (indian museum) আরও বড় বিপর্যয় ঘটতে পারত, আশঙ্কা তদন্তকারীদের। স্রেফ কলকাতা পুলিশের (kolkata police) তৎপরতায় তা এড়ানো গিয়েছে। সূত্রের খবর, অভিযুক্ত জওয়ান অক্ষয়কুমার মিশ্রের দায়িত্বেই ছিল সিআইএসএফ-র (CISF) অস্ত্রভাণ্ডার (armory)। তার চাবি ছিল অক্ষয়ের কাছেই। সেক্ষেত্রে সেই অস্ত্র নিয়ে তিনি আর কী করতে পারতেন, ভেবেই শিউরে উঠছেন কলকাতা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা।


কী ভাবে রক্ষা?
যে ভবনে সিআইএসএফ-র হেড কনস্টেবল লুকিয়ে ছিলেন সেখানেই অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র ও বুলেট ঠাসা CISF-এর অস্ত্রভাণ্ডার রয়েছে। ফলে গত কাল ওই জওয়ানের সঙ্গে সংঘাতে গেলে তার ফল যে মারাত্মক কোনও বিপর্যয় হতে পারত, তা একরকম নিশ্চিত। পরিস্থিতি আটকাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয় কলকাতা পুলিশ। প্রথমে অক্ষয়কুমার কোথায় রয়েছেন, তাঁর লোকেশন বুঝে নেওয়া হয়। তার পর তাঁকে আইসোলেট করে ফেলা হয়। একই সঙ্গে জখমদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ারও ব্যবস্থা করে পুলিশ। কিন্তু তখনও যেহেতু অভিযুক্ত কনস্টেবলকে সরানো যায়নি, তাই জখমদের নিতে আসার সাহস পাচ্ছিলেন না অ্য়াম্বুল্যান্সচালক। টানটান পরিস্থিতি। তার মধ্যেই মাইকে ঘোষণা শুরু করে পুলিশ। অভিযুক্তকে বলা হয়, প্রশাসনের আর্জিতে সাড়া দিতে। কিন্তু বেশ কিছু ক্ষণ কোনও জবাব আসেনি। এর পর অক্ষয়কুমারের মোবাইল নম্বর জোগাড় করে ফোন করা শুরু হয়। সূত্রের খবর, প্রথম দুবার ফোন ধরেননি তিনি। তবে তৃতীয় বার ফোন ধরেন। পুলিশ জানায়, চার দিক থেকে তাঁকে ঘিরে ফেলা হয়েছে। তিনি যেন আত্মসমর্পণ করেন। তখনও কথা বলতে রাজি ছিলেন না অভিযুক্ত। শুধু জানান, তাঁকে নানা রকম ভাবে হেনস্থা করা হয়েছে। অবশেষে পুলিশের তরফে তাঁর বার বার সমস্ত অভাব-অভিযোগ শোনার আশ্বাস দেওয়া হলে আত্মসমর্পণ করেন জওয়ান। বড় বিপর্যয় কাটে। যে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি চালানো হয়েছিল, সেটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। 


যা ঘটেছে...
শনিবার সন্ধেয়  জাদুঘরের আশুতোষ শতবার্ষিকী হলের কাছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনস্থ Central Industrial Security Force বা CISF-এর ক্যাম্পে ডিউটি শেষ করে জড়ো হয়েছিলেন জওয়ানরা। ঘড়িতে তখন সাড়ে ছটা। সূত্রের দাবি,হঠাত্‍ই সেখানে AK-47 থেকে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করেন হেড কনস্টেবল অক্ষয়কুমার মিশ্র। তাঁর গুলিতে মৃত্যু হয় CISF’র ASI রঞ্জিতকুমার সারেঙ্গির। গুলিবিদ্ধ হন সুবীর ঘোষ নামে CISF-এর অ্যাসিন্ট্যান্ট কমান্ডান্ট। তাঁকে SSKM হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পরই এলাকায় ছুটে আসে পুলিশ ও বিপর্যয়য় মোকাবিলা বাহিনী। আসেন কলকাতা পুলিশের কমিশনার। ঘিরে ফেলা হয় গোটা এলাকা। প্রায় দেড় ঘণ্টার টানটান উত্তেজনা চলার পর রাত ৮টা নাগাদ অভিযুক্তকে ধরে ফেলে পুলিশ। ছুটি না দেওয়া নাকি মানসিক অবসাদ না অন্য কোনও কারণে এই কাণ্ড করলেন অভিযুক্ত, জানতে দফায় দফায় জেরা করছেন তদন্তকারীরা।  


আরও পড়ুন:সহকর্মীদের হাসির খোরাকে মনে ক্ষোভ! রাইফেল ছিনিয়ে এনে এলোপাথাড়ি গুলির প্ল্যান অক্ষয়ের