ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা: হোয়াটসঅ্যাপের ডিপিতে পরিচিতর ছবি। কিন্তু নম্বরটি অচেনা। আর সেই নম্বর থেকেই আসছে আপৎকালীন আর্থিক সাহায্য চেয়ে আর্জি। সঙ্কটে প্রিয়জনের পাশে দাঁড়াতে তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নিলেই বিপদ। আর্থিক প্রতারণার শিকার হতে পারেন যে কেউ। সতর্ক করল কলকাতা পুলিশ।
অনলাইনে আর্থিক লেনদেন যত বাড়ছে, ততই যেন চওড়া হচ্ছে অন্তরালে থাকা সাইবার প্রতারকদের হাত। হোয়াটসঅ্যাপ ডিপি-তে পরিচিত বা বিশ্বস্ত কারও ছবি ব্যবহার করে আর্থিক সাহায্য চেয়ে মেসেজ। তাতে সাড়া দিয়ে অর্থ সাহায্য করতে গেলে অনেক সময়ই প্রতারণার শিকার হতে হচ্ছে।
এই ধরনের অভিযোগ নতুন কিছু নয়। এবার তা নিয়ে সতর্ক করল কলকাতা পুলিশ। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার তাঁর ট্যুইট বার্তায় সতর্ক করে লিখেছেন, অপরিচিত ফোন নম্বরে বন্ধুর ডিপি। হোয়াটসঅ্যাপে এমন কোনও মেসেজ পাচ্ছেন, যাতে লেখা রয়েছে তিনি হাসপাতালে রয়েছেন এবং অবিলম্বে টাকা দরকার?উত্তর যদি ‘হ্যাঁ’ হয়, তাহলে সাবধান। মেসেজ প্রেরকের পরিচয় যাচাই না করে টাকা ট্রান্সফার করবেন না এবং নিজের ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত তথ্য শেয়ার করবেন না।
সাইবার প্রতারণার ফাঁদ পাততে গিয়ে, জালিয়াতরা যে মানবিক সম্পর্কের বিশ্বাসের জায়গাটাকেই কাজে লাগাচ্ছে, কলকাতা পুলিশের এই ট্যুইটে তা স্পষ্ট।
দমদম এলাকার বাসিন্দা, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্পোরেট চাকুরে শুনিয়েছেন তাঁর নিজের অভিজ্ঞতার কথা। তিনি জানিয়েছেন, হোয়াটস্যাপে মেসেজ পেয়ে ওই নম্বরে ফোন করেন তিনি। তখন তাঁকে বলা হয় যে, জরুরি পরিস্থিতিতে কথা বলতে পারছেন না। যেন টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
সাইবার অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রথমে বিভিন্ন ব্যক্তির সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ঘেঁটে তাঁর ঘনিষ্ঠদের তালিকা বানানো হয়। পরিচিত, প্রিয় এবং ভরসার মানুষটির ছবি ব্যবহার করে তৈরি করা হয় ভুয়ো হোয়াটসঅ্যাপ ডিপি।তারপর অচেনা নম্বর থেকে মেডিক্যাল এমার্জেন্সির কথা বলে আর্থিক সাহায্য চাওয়া হয়। অনলাইনে আর্থিক সাহায্যের পর জালিয়াতের ঘরে টাকা তো যায়-ই। সেই সঙ্গে তাদের হাতে চলে যায় অর্থ প্রেরকের ব্যাঙ্ক ডিটেলস।
অন্যদিকে, নবান্নের এক কর্মীর সঙ্গে ২৫ হাজার টাকার বেশি আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে আসানসোল থেকে দীপু দাস নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ।