কলকাতা: রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে রাজভবনের এক অফিসার এবং দুই কর্মীকে তলব করল হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিশ। রাজ্যপালের OSD, এসএস রাজপুত এবং রাজভবনের আরও দুই কর্মী কুসুম ছেত্রী ও সন্ত লালকে অভিযুক্ত হিসেবে তলব করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, রাজভবনের তরফে CC ক্যামেরার ফুটেজ দেখানো হয় সেখানে দেখা যায় রাজভবনের কর্মী কুসুম ছেত্রীকে। পুলিশের দাবি, অভিযোগকারিণীর বক্তব্য ও CC ক্যামেরার ফুটেজ দেখেই এই তিন জনকে তলব করা হয়েছে। (Raj Bhavan Controversy)


রবিবার ওই তিন জনকে তলব করেছে হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিশ। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করছে কলকাতা পুলিশের বিশেষ অনুসন্ধানকারী দল। গত ১৫ মে রাজভবনের ওই তিন কর্মীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৬৬ এবং ৩৪১ নম্বর ধারায় এফআইআর দায়ের করা হয়। ১৪ মে অভিযোগকারিণীর বয়ান নেওয়া হয়, তার পর দায়ের হয় এফআইআর। (CV Ananda Bose)


একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ এবং অভিযোগকারিণীর বয়ানের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের হয়। ওই তিন জনের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ সামনে এসেছে, তা হল, অভিযোগ জানাতে গেলে অভিযোগকারিণীকে বাধা দেন ওই তিন জন, তিনি যাতে অভিযোগ জানাতে যেতে না পারেন, সেই চেষ্টাও করা হয়। বিষয়টি নিয়ে ওই তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। রবিবার সকালে ১১টায় থানায় হাজির হতে বলা হয়েছে ওই তিন জনকে। 


আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: 'সব সাধু তো সমান নয়', মমতার নিশানায় মিশন-আশ্রমের সন্ন্যাসীরা


রাজ্যপাল বোসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে এর আগেও রাজভবনের বেশ কয়েকজন কর্মীকে তলব করা হয়। কিন্তু সেবার কেউ হাজিরা দেননি। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। সংবিধানে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরর অনুমতি না থাকলেও, রাজভবনের কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় পুলিশ। 


এ নিয়ে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, "নোংরা রাজনীতি করছে তৃণমূল, তাতে শামিল করছে পুলিশকে। পুলিশকে বলব, চাকরি বাঁচানোর জন্য যতটা প্রয়োজন, ততটুকুই করুন। নইলে পরে চাকরি যখন যাবে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু আপনাদের চাকরি ফিরিয়ে দিতে পারবেন না।" তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের বক্তব্য, "রাজভবনে যা ঘটেছে, তা অত্যন্ত আপত্তিকর এবং উদ্বেগজনক। নির্যাতিতা যখন অভিযোগ দায়ের করেছেন, পুলিশ তদন্ত করছে। রাজ্যপাল সাংবিধানিক রক্ষাকবচ ব্যবহার করে তদন্তের বাইরে থাকছেন। কিন্তু এই ঘটনায় কোনও না কোনও ভাবে যাঁদের নাম উঠে আসছে, তাঁদের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ।"


গোটা ঘটনায় সিপিএম-এর রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, "রাজ্যপালের উচিত ছিল, স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তদন্তকে আহ্বান করা। আমি যদি রাজ্যপাল হতাম, বলতাম, অভিযোগ যখন উঠেছে তদন্ত করো। কিন্তু সাংবিধানিক রক্ষাকবচ আছে বলে প্রথম থেকেই মানুষের মনে সন্দেহের জায়গা করে দিয়েছেন। তদন্তে যদি অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যায়। কিন্তু তদন্ত যাঁরা এড়াতে চান, তাঁরা কোনও না কোনও ভাবে দুর্বল জায়গায় রয়েছেন।"