প্রকাশ সিনহা, ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, আবীর দত্ত, কলকাতা : ভোরবেলা বাইপাসে অভিষিক্তা মোড়ের কাছে মেট্রোর পিলারে গাড়ির প্রচণ্ড ধাক্কা। দুমড়ে-মুচড়ে যায় গাড়িটি। উদ্ধার করা হয় গুরুতর আহত তিনজনকে। দুই মধ্য বয়স্ক ও এক কিশোরকে। সেই দুর্ঘটনা থেকেই যে বেরিয়ে আসবে এমন ভয়ঙ্কর কাণ্ডের কথা, তা সত্যিই ভাবনাতীত। 

ঘটনার সূত্র ধরে সামনে চলে এসেছে একই পরিবারের তিন সদস্যের রহস্য মৃত্যুর কথা । ট্যাংরার বাড়িতে পড়ে রয়েছে পরিবারের আরও তিনজনের দেহ, জানান দুর্ঘটনায় আহত এক সদস্যই। তারপর একের পর এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা আসে সামনে। দেখা যায় তাঁদের ট্যাংরার বাড়িতে হাতের শিরা কাটা অবস্থায় পড়ে রয়েছে  দুই মহিলা ও এক কিশোরীর দেহ।  প্রতিবেশী সূত্রে খবর, স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে ট্যাংরায় 21C, চিত্তনিবাস নামের এই চারতলা বাড়িতে থাকতেন দুই ভাই। পরিবারের মহিলা সদস্যদের মৃত্যু হয়েছে, পুরুষরা দুর্ঘটনার পর রয়েছেন হাসপাতালে। আর এই দুটি ঘটনা কোন সুতোয় গাঁথা, সেই অনুসন্ধান চলছে। প্রতিবেশীদের বয়ান, সিসিটিভি ফুটেজ থেকে উঠে আসছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। 



  • প্রথমত খটকার বিষয় হল,  ট্যাংরার চারতলা বাড়ির তিনতলায় তিনটি আলাদা ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে তিনজনের মৃতদেহ। কিন্তু  বাড়ির দোতলাতেও মিলেছে রক্তের দাগ। দোতলায় রক্তের দাগ কেন?

  • উদ্ধার হওয়া গাড়ির ভিতরে সিটে পড়ে রয়েছে কাঠ ও ক্রিস্টালের একাধিক হ্যান্ডব্যান্ড। হ্যান্ডব্যান্ড তো হাতে থাকার কথা। এই সব হ্যান্ডব্যান্ড কাদের?  

  • সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রাতে তড়িঘড়ি গাড়িতে উঠছে দুই ব্যক্তি ও এক কিশোর। বাড়ি থেকে বেরোনো ও দুর্ঘটনার মধ্যে ঘণ্টা তিনেকের ফারাক রয়েছে। মাঝখানের সময়টা তাঁরা কোথায় গিয়েছিলেন? 

  • দুর্ঘটনায় আহত এক ভাই জানিয়েছিলেন, তাঁরাও আত্মহত্যাই করতে চেয়েছিলেন। তাই যদি সত্যি হয়, তাহলে তারা সিটবেল্ট লাগালেন কেন, কেনই বা বাড়ির বাইরে এলেন ?

  • স্থানীয় এক কেয়ারটেকার জানিয়েছেন, গতকাল ১০-১২ জন দফায় দফায় দুপুরে বিকেলে ও রাতে ট্য়াংরার বাড়িতে এসেছিল। কিন্তু বেল বাজিয়েও বাড়িতে কারও সাড়া পাননি তাঁরা। কারা তারা?

  • হাসপাতালে ভর্তি কিশোরের হাতে অসংখ্য কাটা-চিহ্ন। সেগুলি কোনওটাই গাড়ি দুর্ঘটনার দরুণ নয়, জানিয়েছে হাসপাতাল। তাহলে তার হাতে এমন কাটা দাগ কেন ? 

    এমন একাধিক প্রশ্ন ভাবাচ্ছে গোয়েন্দাদের। উত্তর খুঁজছে পুলিশ। তদন্তে  কাজে লাগানো হচ্ছে ডগ স্কোয়াডকে। বাড়িতে ঢোকার মূল দরজার সামনে থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় বসানো আছে সিসিটিভি ক্যামেরা। পুলিশের স্ক্যানারে রয়েছে
    ওই সব সিসিটিভির ফুটেজ। সেখান থেকে কী কোনও রহস্যোদ্ঘাটন হবে ?