ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, কলকাতা: শহরে ফের অগ্নিকাণ্ড। তিলজলায় প্রিন্টিং কারখানায় ভয়াবহ আগুন (Tiljala Fire)। অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হল বাবা ও ছেলের। আর এক ছেলের অবস্থা আশঙ্কাজনক। চিত্তরঞ্জন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তিনি। আগুন লাগার কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার ঘটেছে। তাঁদে দাবি, আগুন লাগার খবর পেয়েও দেরিতে এসে পৌঁছয় দমকল বাহিনী (Kolkata News)।
দু'জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন তৃতীয় জন
বৃহস্পতিবার সকালে ওই প্রিন্টিং কারখানায় আগুন লাগে। তপসিয়া রোডের ওই কারখানায় জুতোর প্রিন্টিংয়ের কাজ হয়। এ দিন সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ আগুন লাগে কারখানায়। রাতভর কারখানাতেই ছিলেন নিহত বাবা ও ছেলে এবং আহত আর এক ছেলে। আগুনে দগ্ধ হন তাঁরা। দু'জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন তৃতীয় জন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ এই ঘটনা ঘটে। নিহত দুই ব্যক্তিকে মহম্মদ নাসিম (৫০) এবং তাঁর এক ছেলে মহম্মদ আমির (২৫) মারা গিয়েছেন। আহত হয়েছেন আর এক ছেলে মহম্মদ জসিম। কারখানার ভিতরেই ছিলেন তাঁরা। রাতে কাজ করছিলেন। শাটার বন্ধ করা ছিল। আচমকা আগুনের শিখা চোখে পড়ে। হইহই পড়ে যেতে শাটার খুলে কোনও মতে বেরিয়ে আসেন ছোট ছেলে জসিম। বাকি দু'জন বেরিয়ে আসতে পারেননি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, প্লাস্টিকের প্রচুর ব্যাগ মজুত ছিল কারখানায়। মজুত থাকত প্রচুর রাসায়নিক। কী করে আগুন লাগল তা নিয়ে রয়েছে ধন্দ। এক জন বেরিয়ে এলেন, বাকিরা কেন বেরোতে পারলেন না, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও। স্থানীয় এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, আচমকা ধোঁয়া বেরোতে দেখি। টেনে একজনকে বের করি আমরা। বাকি দু'জন ঘুমিয়ে ছিলেন। জল এনে নেভানোর চেষ্টা করি। কিন্তু ওই দু'জন বেরোতে পারেননি।
সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ আগুন লাগে
নিহতরা কারখানায় রাতে কাজ করছিলেন। তার পর কারখানার ভিতরেই একটি মাচানে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। তাতেই নেনে আসতে পারেননি বলে দাবি স্থানীয়দের। এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। যে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়, তাতে দেখা গিয়েছে আগুনের শিখা পৌঁছে যায় প্রায় তিন তলা বাড়ি পর্যন্ত। ঘিঞ্জি এলাকায় আশেপাশেও আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। স্থানীয়রা আগুন নেভাতে পারেননি। দমকল এসেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এক ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণ করা হয় আগুন। পুড়ে যাওয়া দুই দেহ উদ্ধার করা হয়। দমকলের তরফে জানানো হয়েছে, আগুন লাগার কারণ নিয়ে পৃথক তদন্ত করা হবে তাদের তরফে।