কলকাতা: আর জি কর হাসপাতালের নার্সিং হস্টেলে এবার আত্মহত্যার চেষ্টা। আত্মহত্যার চেষ্টা তৃতীয় বর্ষের নার্সিং পড়ুয়ার। রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে ওই পড়ুয়াকে। এউ মুহূর্তে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে ভর্তি রয়েছেন তিনি। জানা গিয়েছে, রুমমেটের সঙ্গে বচসা, অশান্তি হয় তাঁর। সেই কারণেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। (Kolkata R G Kar Hospital)


আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ভিতর যে নার্সিং হস্টেল রয়েছে, সেখানে এই ঘটনা ঘটে বলে জানা গিয়েছে। জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই তরুণী। পুরুলিয়ার বাসিন্দা তিনি। পাশের ঘরের সহপাঠীরা রক্তাক্ত অবস্থায় ওই তরুণীকে উদ্ধার করেন। জানা গিয়েছে, ওই তরুণী আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। যে ঘরে থাকতেন, সেই ঘরের আলো জ্বালা নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই রুমমেটের সঙ্গে অশান্তি চলছিল। গতকাল রাতেও অশান্তি বাধে। শেষ পর্যন্ত চরম পদক্ষেপ করতে যান ওই তরুণী। (Kolkata News)


ওই তরুণীর সহপাঠীরা জানিয়েছেন, রাতে পড়ার জন্য ঘরের আলো জ্বালিয়ে রাখা নিয়ে অশান্তি চলছিল। সেই নিয়ে হাসপাতালের নার্সিং কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগও জানান ওই তরুণী। কিন্তু ওই তরুণীর দাবি, কর্তৃপক্ষ উল্টে তাঁর উপরই দোষারোপ করেন। ফলে মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেন তিনি। সেই থেকেই তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে জানা গিয়েছে। আপাতত হাসপাতালেক ট্রমা কেয়ার সেন্টারে চিকিৎসা চলছে তাঁর।


এই ঘটনায় মুখ খুলেছেন নার্সেস ইউনিটি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ভাস্বতী মুখোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, "নিজেদের মধ্যে কোনও সমস্যা হয়েছিল শুনলাম। দায়িত্বে রয়েছেন যিনি, তাঁকে জানিয়েছিলেন। তার পরও এই ঘটনাটা ঘটেছে। যিনি দায়িত্ব নিলেন, তাঁকে আরও সময় ধরে, ধৈর্য ধরে, সহনশীলতার দিকে এগোতে হবে। যাঁর কাছে অভিযোগ করা হয়েছে, তাঁর তুচ্ছ মনে হতে পারে। কিন্তু ওঁদের কাছে তো বড় সমস্যা! আমাদের আর একটু অন্য রকম ভাবে ভাল রাখতে পারি। খুবই  দুর্ভাগ্যজনক। আশাকরি উনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবেন।"


এই আর জি কর হাসপাতালেই তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা ঘটে তিন মাস আগে। এখনও সেই ঘটনার রেশ কাটেনি। দফায় দফায় প্রতিবাদ, মিছিল চলছে। হাসপাতালে থ্রেট কালচার চলার অভিযোগও সামনে এসেছে। শাসকদলের ঘনিষ্ঠরা হাসপাতালে দাপিয়ে বেড়ান বলে অভিযোগ এসেছে একাধিক। সেই আবহেই নার্সিং পড়ুয়ার আত্মঘাতী হওয়ার এই চেষ্টা। গোটা ঘটনায় কর্তৃপক্ষের দিকেও আঙুল উঠছে। 


অন্য দিকে, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে অভয়ার প্রতীকী মূর্তি ভাঙচুরের ঘটনাও সামনে এসেছে। আর জি কর মেডিক্যালের চিকিৎসককে খুন-ধর্ষণের ঘটনার তিন মাস পূর্তিতে, শনিবার ফের পথে নেমেছিলেন জুনিয়র ডাক্তার ও সাধারণ মানুষ। ফের কালো মাথার দখলে চলে গিয়েছিল শহরের রাস্তা। ওই কর্মসূচির পাশাপাশি, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ-সহ আরও কয়েকটি মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে দ্রোহের গ্যালারির আয়োজন করা হয়েছিল। নিহত চিকিৎসকের বিচারের দাবিতে, সেখানেই রাখা হয়েছিল দু'টি প্রতীকী মূর্তি। কিন্তু এক রাতের মধ্যেই বদলে গেল ছবিটা। রবিবার সকালে কলকাতা মেডিক্যাল চত্বরে দেখা গেল, ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে আছে মূর্তিগুলি। এর পিছনেও ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে দাবি করছেন আন্দোলনকারীরা।