সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: গার্ডেনরিচের পর শহরে আরও এক অ্যাপ-প্রতারণাচক্রের (App Fraud) হদিশ মিলল। এ বার সল্টলেকে (Salt Lake)। এখনও পর্যন্ত ৩২ কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ সামনে এসেছে। ২০১৮ সাল থেকে অ্যাপের মাধ্যমে টাকা তোলা হয় বলে বলে দাবি। তাতে প্রতারণাচক্রের মূল পাণ্ডা হিসেবে স্বর্ণেন্দু জানা নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ (Arrest)।
অ্যাপের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা প্রতারণায় গ্রেফতার যুবক
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮ সাল থেকে অ্যাপের মাধ্যমে টাকা তোলা শুরু হয় (Kolkata News)। ভাল রিটার্নের টোপ দিয়ে তোলা হতো টাকা। 'আরডিকিউ অল ইন ওয়ান’ অ্যাপের মাধ্যমে টাকা তোলা হতো বলে জানা গিয়েছে। পুলিশের দাবি, বাজার থেকে ৫০ কোটির বেশি টাকা তোলা হয়েছিল।
গার্ডেনরিচে ই নাগেটস গেমিং অ্যাপের মাধ্যনে প্রতারণার অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনায় আমির খান নামের একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঠিক একই ভাবে 'আরডিকিউ অল ইন ওয়ান’ অ্যাপের মাধ্যনমে গত চার বছরে ৫০ কোটি টাকা তোলা হয় বলে অভিযোগ। তদন্তে নেমে পুলিশের দাবি, টাকার অঙ্ক ১০০ কোটিও ছুঁতে পারে।
এখবনও পর্যন্ত ৩২ কোটির প্রতারণা নিয়ে সল্টলেকের ইলেকট্রনিক্স থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযুক্ত স্বর্ণেন্দু আদতে হুগলির তারকেশ্বরের বাসিন্দা। জানা গিয়েছে, ওই অ্যাপের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে অনলাইনে টাকা আসত। মাসে কখনও ২ শতাংশ, কখনও আবার ৩ শতাংশ সুদ পেতেন তাঁর, যা অন্য় ব্যাঙ্কের বার্ষিক সুদের হারের তুলনায় অনেকটাই বেশি।
প্রতারিত এক ব্যক্তি এবিপি আনন্দে বলেন, "স্বর্ণেন্দু জানা তারকেশ্বরের ছেলে বলে জানি। সেখানে অফিস খুলে প্রথম অ্যাপের মাধ্যমে স্টকে টাকা খাটানোর কথা বলে। পর পর টাকা নিয়ে গিয়েছে। নানা ভাবে প্রলোভন দিয়েছে। কিন্তু নানা অজুহাতে হগত এক বছর ধরে টাকা দেওয়া বন্ধ রেখেছে। ডিম্য়াট, সেভিংস অ্যাকাউন্টগুলিও অকার্যকর। "
অনলাইনে টাকার লেনদেন হতো, ছিল এজেন্টও
শুধু অনলাইনই টাকা আসত না, এজেন্টও নিয়োগ করা হয়েছিল। গ্রামে-গঞ্জে গিয়ে নগদ তুলে আনতেন তাঁরা। কিন্তু ২০১৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সকলে সুদ নিয়মিত পেলেও, ২০২১-এর ২৪ নভেম্বরের পর থেকে মুনাফার টাকা পাচ্ছিলেন না আমানতকারীরা। কোটি কোটি টাকার প্রতারণা হয়েছে বলে অভিযোগ। স্বর্ণেন্দুকে গ্রেফতার করা হলেও, সংস্থার আরও তিন ডিরেক্টর বেপাত্তা। স্বর্ণেন্দুকে এ দিন বিধাননগ আদালতে তোলা হয়। তাঁকে নয় দিনের হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাকিদের হদিশ পেতে চাইছে পুলিশ। তদন্ত শুরু হয়েছে।