কলকাতা: মায়ের সঙ্গে স্কুটারে করে স্কুল থেকে ফেরার সময় বাসের ধাক্কা। তাতেই প্রাণ গেল একরত্তির। বেহালা, বাঁশদ্রোণী, পাইকপাড়ার পর এবার ঘটনা সল্টলেকে। শহরে ফের বেপরোয়া গতির বলি খুদে পড়ুয়া, আহত আরও এক শিশু। চোখের সামনে সন্তানের এহেন মর্মান্তিক পরিণতি মেনে নিতে পারছেন না মা। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ডুকরে উঠছেন বারবার।
এদিন সল্টলেক ২ নম্বর গেটের কাছে দুটি বাসের রেষারেষির জেরে দুর্ঘটনা ঘটে। রেষারেষি চলাকালীন পিছন থেকে এসে স্কুটারে ধাক্কা মারে বাস। তাতেই মৃত্যু পড়ুয়ার। এদিন সকাল সাড়ে ১১টা সল্টলেক থেকে বেরনোর জন্য ২ নম্বর গেটের দিকে স্কুটি করে আসছিলেন নূরজাহান পাইক। স্কুটির পিছনে বসেছিল তাঁর ছেলে কেষ্টপুর বৈষ্ণোদেবী অ্য়াকাডেমির চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র আয়ুষ পাইক। সামনে ছিল তাঁর ননদের মেয়ে জান্নাত খাতুন। অভিযোগ, 215A রুটের বাস পিছন থেকে ধাক্কা মারে। মাথায় আঘাত লাগে আয়ুষের। প্রথমে নর্থ সিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে অন্য় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্য়ু হয় চতুর্থ শ্রেণির ওই ছাত্রের।
ঠিক কী ঘটেছিল এদিন? কী অভিযোগ?
নূরজাহান জানান, "তিনটে হাসপাতাল। নর্থ সিটি গেছিলাম। ওরা নিল। চাইল্ড হাসপাতাল না, যা হোক করে প্রেসার মাপল, অক্সিজেন দিল। মাথা ফেটে গেছিল ব্যান্ডেজ করল। বলল পার্কস্ট্রিটে চাইল্ড হাসপাতালে ICU-তে নিয়ে যেতে হবে। ছেলের খিঁচ ধরছিল। শিশু হাসপাতালে তারপর গেছি। বললাম বাচ্চার অবস্থা খারাপ। এক মহিলা ডাক্তার ছিল। বলছে আমাদের এই নেই, ওই নেই। আমাদের হবে না। আর দেখলই না। ওখানেই দম ছেড়ে দিয়েছে। বলছে NRS-এ নিয়ে যাও। বাচ্চা আমার একভাবেই তাকিয়ে রয়েছে। আর নিঃশ্বাস ফেলছে না। পাশে বেলেঘাটার হাসপাতাল আছে। ওখানে গেছি। সঙ্গে সঙ্গে ভর্তি নিল। বড় ডাক্তার দেখে বলল বাচ্চা ১০-১৫ মিনিট আগে মারা গিয়েছে। আমি আগে ছিলাম। বাস পিছনে ছিল। বলতে পারছি না। হুট করে পিছন দিক থেকে আমার বাচ্চাকে মেরে দিল।''
এদিকে প্রাণের বিনিময়ে ফিরল হুঁশ। দুর্ঘটনা এড়াতে ও বেপরোয়া গতিতে যান নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আগামী ১৪ নভেম্বর বিকেল ৫টায় সল্টলেকে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে বৈঠকের ডাক। বাস, ট্রাক অ্যাসোসিয়েশনের ও অটো ইউনিয়নের সঙ্গে বৈঠক। উপস্থিত থাকবেন পরিবহণমন্ত্রী,পুরমন্ত্রী। থাকবেন কলকাতা পুলিশ কমিশনার ও রাজ্য পুলিশের ডিজি।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।
আরও পড়ুন: Manoj Mitra Demise: বাগান শূন্য করে না ফেরার দেশে বাঞ্ছারাম, গান স্যালুটে মনোজ মিত্রকে শেষ বিদায়