ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, কলকাতা: লাগাতার অভিযান চলছে। কিন্তু তার পরেও ছেঁকা দিচ্ছে আনাজের দাম (Vegetable Price Hike)। টাস্ক ফোর্স বাজারে ঢুকলেই কমছে দাম, বেরিয়ে গেলেই ফের চড়া! অভিযোগ করছেন ক্রেতারা। ঘটনার কথা স্বীকার টাস্ক ফোর্সের দাবি, একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী এই কাজ করছেন। যে সব অসাধু ব্যবসায়ী দাম কমাচ্ছেন না, প্রয়োজনে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব।


ছেঁকা দিচ্ছে আনাজের দাম: বাজারে গিয়েছিলেন দাম হয়ত কিছুটা কমবে এই আশায়। কিন্তু তা তো হলই না, উল্টে দেখা গেল অন্য ছবি।এ যেন টাস্ক ফোর্সের সঙ্গে বিক্রেতাদের লুকোচুরি খেলা। বাজারে অভিযান শুরু হলেই কমছে দাম, অভিযান শেষে ফের ঊর্ধ্বমুখী। ক্রেতাদের অভিযোগ, কোনও অভিযান কোনও ব্যবস্থাতেই কোনও কাজ হচ্ছে না। দাম বেড়েছে দুধের, এরই মধ্যে মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা দিয়ে চলেছে কাঁচা সবজির দাম। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাজারে বাজারে অভিযান চালাচ্ছে রাজ্য সরকারের টাস্ক ফোর্স।ক্রেতাদের অভিযোগ, টাস্ক ফোর্স বাজারে গেলেই কমছে জিনিসের দাম। চলে গেলেই ফের চড়া। এদিন বাগুইআটি বাজারে এক ক্রেতা বলেন, "আমি তো ১৫ টাকা লঙ্কার শ' একটু আগে শুনে এলাম। এখানে এঁরা যখন শুনছেন তখন বলছে ১২ টাকা। ক্রেতা হল সঠিক ব্যক্তি যাঁকে জিজ্ঞাসা করলে সঠিক দাম জানা যাবে। সব সবজিরই অসম্ভব দাম।'' 

মঙ্গলবার প্রথমে উল্টোডাঙা হোলসেল বাজারে হানা দেন টাস্ট ফোর্সে সদস্য ও ইবি আধিকারিকরা। তারপরে বাগুইআটি খুচরো বাজার। হোলসেস মার্কেট দাম কমলেও খুচরো বাড়ার চড়া বলে স্বীকার করেছেন টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা। টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে বলেন,  "এরা সরাসরি কোলো মার্কেট কিম্বা উল্টোডাঙা বাজার থেকে মাল আনে। এখানে এনে কোথায় ৪০%, কোথায় ৫০% দাম বাড়িয়ে এরা বিক্রি করে। এটা সামাজিক অপরাধ।'' আরেক সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে বলেন, "তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা কথা বলছি। এটা একমাত্র নজরদারি চালাতে পারে লোকাল থানা। প্রত্যেকটা দেকানে লিস্ট লাগাতে হবে। যে দামে বিক্রি করছেন, তার একটা প্রাইস লিস্ট ঝোলাতে হবে। যদি প্রাইস লিস্ট না থাকে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।''

মুখ্যসচিব বি পি গোপালিকার দাবি, বাজারে টাস্ক ফোর্সের অভিযানে কিছুটা হলেও দাম নিয়ন্ত্রণে এসেছে। যারা এখনও দাম কমাচ্ছে না প্রয়োজনে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বাজারে জোগানো বাড়ানোর পাশাপাশি, সুফল বাংলা স্টলের সংখ্যা বাড়ানোর কথাও বলেন তিনি। কেন্দ্রের পরিসংখ্যান বলছে, গত মাসে দেশের পাইকারি বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল ৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ। যা ১৬ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। মে মাসে এটি ছিল ২.৬১ শতাংশ, যা গত ১৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। জুনে খাদ্যপণের পাইকারি দাম বেড়েছে প্রায় ১১ শতাংশ। পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে ৯৩.৩৫ শতাংশ, আলুর মূল্যবৃদ্ধি ৬৬.৩৭ শতাংশ। সবজির দাম বেড়েছে ৩৮.৭৬ শতাংশ। সেই সঙ্গে দাম বেড়েছে মাছ, মাংস, ডিমের।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।


আরও পড়ুন: Calcutta High Court:'অসম্মানজনক মন্তব্য করতে পারবেন না মুখ্যমন্ত্রী' রাজ্যপালের মানহানি মামলায় নির্দেশ হাইকোর্টের