কলকাতা : রাজ্যে উদ্বেগজনক ডেঙ্গি-চিত্র। রোজ হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্য়া। মৃত্যুও। এর মাঝেই রাজ্য সরকারকে বারবার নিশানা করছে বিরোধীরা। তারা তুলে এনেছে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বরাদ্দের অভাব, তথ্য গোপনের মত অভিযোগ। এরমাঝেই শাসকপক্ষও পাল্টা তাঁদের বক্তব্য রাখছে।


সোমবারও শহরের দু-প্রান্তে কংগ্রেস ও বিজেপির পক্ষ থেকে বিক্ষোভ-মিছিলের আয়োজন করা হয়। আর তা নিয়েই একযোগে বিরোধীদের নিশানা শানিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। কলকাতার মেয়রের আক্রমণ, 'নেই কাজ তো খই ভাজ।'


'যোগী-রাজ্যে বুলডোজার, এখানে গণতন্ত্র'


বঙ্গে গণতন্ত্র রয়েছে বলেই প্রতিবাদ করার রাস্তাও রয়েছে বলেই মত ফিরহাদ হাকিমের। যদিও প্রতিবাদের সেই রাস্তার বিরোধীরা অপব্যবহার করছে বলে জানিয়ে তাঁর খোঁচা, 'পারলে আদিত্যনাথের রাজ্যে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান, কারণ ওখানে ডেঙ্গির প্রকোপ এবারে সবথেকে বেশি। ওখানে গিয়ে পারবেন না, কারণ ওঁদের পুলিশ মেরে তুলে দেয়। ওখানে বুলডোজার চলে আর বাংলায় গণতন্ত্র।'


প্রসঙ্গত, ডেঙ্গি রুখতে কলকাতা পুরসভা ও রাজ্য সরকার ব্যর্থ এই অভিযোগ তুলে দক্ষিণ কলকাতায় এদিন মিছিল করে কংগ্রেস। মেয়রের বাড়ি পর্যন্ত যাওয়ার কথা থাকলেও তাঁদের মিছিল অনেক আগেই আটকে দেয় পুলিশ। এদিকে, উত্তর কলকাতায় ডেঙ্গি ইস্যুতেই শাসককে নিশানা করে মিছিল করে বিজেপির যুব মোর্চা।


প্রকোপ মেয়রের ওয়ার্ডেও


কলকাতা সহ রাজ্যে ডেঙ্গি হাল যে ভয়াবহ তা অবশ্য স্বীকার করে নিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। কলকাতার মেয়রের কথা, 'ডেঙ্গি যেন মহামারীর আকার নিয়ে এসেছে এবার।' মেয়র ফিরহাদ হাকিমের ( Mayor Firhad Hakim )  ৮২ নম্বর ওয়ার্ডে এখনও অবধি ১১১ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। সর্বাধিক ৪৭৬ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে। কলকাতায় এখনও অবধি ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর শহরে আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার পেরিয়ে গেছে। কলকাতা পুরসভার ( KMC)  সূত্রে খবর, শহরের ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১২টি ওয়ার্ডে ১০০-জনের বেশি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। 


প্লেটলেটের আকাল


রাজ্যে ভয়ঙ্কর ডেঙ্গি পরিস্থিতিতে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্লেটলেটের আকাল। রবিবার রাতের হিসেবে, কলকাতার ব্লাড ব্যাঙ্কে প্লেটলেটের ভাঁড়ার শূন্য। মানিকতলা ব্লাড ব্যাঙ্ক, এসএসকেএম, আরজিকর, এমআর বাঙুরে প্লেটলেট শূন্য। শিশুমঙ্গল, ইন্সটিটিউট অফ চাইল্ড হেলথ, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজেও একই অবস্থা। পিয়ারলেস হাসপাতাল, লাইফ কেয়ারেও প্লেটলেটের সংখ্যা শূন্য। একই অবস্থা জেলার ব্লাড ব্যাঙ্কেও। নর্থ বেঙ্গল মেডিক্যাল কলেজে রয়েছে মাত্র ৩৫ ইউনিট প্লেটলেট।


আরও পড়ুন- জ্বর হলে, ডেঙ্গি না কোভিড, কী করে বুঝবেন ?